দেবশ্রী সিনহা, নয়াদিল্লি: শুধু আত্মারই নয়, প্রয়োজন হলে নিজের পরিবার বা আপনজনকে বাঁচাতে আইন হাতে তুলে নেওয়া যেতেই পারে৷ এবার এই নিদান দিল স্বয়ং সুপ্রিম কোর্ট৷ সাফ জানিয়ে দিল, বাবা-মা বা পরিবারের অন্য কোনও সদস্যের উপর হামলা হলে বা সেইরকম পরিস্থিতি তৈরি হলে তা প্রতিরোধ করার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে দেশের প্রতিটি নাগরিকের৷ সেক্ষেত্রে আইন ভাঙার অধিকারও রয়েছে তাদের৷ রাজস্থানের একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে একথা জানিয়ে দেন বিচারপতি দীপক মিশ্র ও বিচারপতি শিবকীর্তি সিংহ৷ এই পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে রাজস্থান হাই কোর্টের রায়ও পাল্টে দেন তাঁরা৷
কী ছিল সেই মামলা? যার জন্য শীর্ষ আদালত খুনের চেষ্টায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার রায়কেও পাল্টে দিল? পাশাপাশি স্বীকার করে নিল “এটা সত্যি যে, দোষী সাব্যস্ত হওয়া দুই ভাই প্রতিবেশীদের উপর হামলা চালিয়ে হিংসার পথ বেছে নিয়েছে৷ তবে তা করা হয়েছে নিজের পরিবারের সুরক্ষা জন্য৷” ঘটনার প্রেক্ষাপট নিছকই প্রতিবেশীদের সঙ্গে ঝামেলা৷ তবে সেই বিবাদ শেষ পর্যন্ত সংঘর্ষে পরিণত হয়৷ রকমারি অস্ত্র নিয়ে পড়শিরা পৌঁছে যায় দুই ভাইয়ের বাড়িতে৷ তাদের চোখের সামনে হামলা চালায় বাবা-মা’র উপর৷ বাবা মারা যান৷ এই ভয়ানক দৃশ্য সহ্য করতে না পেরেই পড়শিদের উপর পাল্টা হামলা করে তারা৷
পরে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে এই দু’জন৷ খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করে রাজস্থান পুলিশ৷ নিম্ন আদালত ও রাজস্থান হাই কোর্টে দোষী সাব্যস্ত হয় এই দুই ভাই৷ তবে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, নিরুপায় হয়েই তারা পাল্টা হামলা চালিয়েছিল৷ একইসঙ্গে বিচারপতিরা জানিয়ে দেন, পরিবারের নিরাপত্তা বজায় রাখাও দায়িত্বের মধ্যে পড়ে৷ সেক্ষেত্রে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া সম্ভব৷
আইন বিশেষজ্ঞদের মত, শীর্ষ আদালতের এই রায় ঐতিহাসিক৷ তবে আগামিদিনে এই রায়ের অপব্যবহার করার ঝুঁকিও প্রবল৷ অপরাধীরা পরিবারের নিরাপত্তার অজুহাত দিয়ে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণিত করার চেষ্টা চালাবে৷ সেক্ষেত্রে এই রায় দানের পরবর্তী দিক নির্দেশ করা উচিত শীর্ষ আদালতের৷
The post পরিবারের নিরাপত্তায় আইন ভাঙায় সায় সুপ্রিম কোর্টের appeared first on Sangbad Pratidin.