সোমনাথ রায়, নয়া দিল্লি: নির্বাচনী প্রচারে খয়রাতির (Freebie) ঘোষণা সংক্রান্ত মামলাটি তিনজন বিচারপতির বেঞ্চে পাঠিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। কিছুদিন আগেই খয়রাতি প্রসঙ্গে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সর্বদলীয় বৈঠকের সুপারিশ করেছিল শীর্ষ আদালত (Supreme Court)। সেই সঙ্গে একটি কমিটি গঠন করারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, এই মামলার বিচার করবে তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ। কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, গণতন্ত্রে ভোটাররাই শেষ কথা। খয়রাতি প্রসঙ্গে ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট যা রায় দিয়েছিল, তার ভিত্তিতেও সাম্প্রতিক মামলাগুলির বিচার করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০১৩ সালের একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, দেশের মানুষের অবস্থার উন্নতি করা সরকারের কর্তব্য। সংবিধানের নির্দেশমূলক নীতিতেও একই ধরনের কথা বলা হয়েছে। সরকার যদি বিনামূল্যে মানুষকে বিশেষ কিছু সুবিধা দেয় তাহলে সেখানে আদালতের হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই। তাই সাম্প্রতিক মামলা প্রসঙ্গে ভারতের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা বলেছেন, “খয়রাতি প্রসঙ্গে বিশদে শুনানি হওয়ার দরকার আছে। তাছাড়াও এই বিষয়ে আদালত কতদূর হস্তক্ষেপ করতে পারে, তা নিয়েও আলোচনা করার প্রয়োজন। সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি আদৌ কার্যকর হবে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।”
[আরও পড়ুন: জনপ্রিয়তায় তিনিই শীর্ষে, সব রাষ্ট্রনেতাদের পিছনে ফেললেন মোদি, দাবি মার্কিন সমীক্ষায়]
খয়রাতি প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছেন বিজেপি নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায়। তিনি জানান, নির্বাচনের আগে অলীকভাবে প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করে রাজনৈতিক দলগুলি। তার ফলে প্রভাবিত হন ভোটাররা। শুক্রবার শীর্ষ আদালতের তরফেও বলা হয়েছে, গণতন্ত্রে নির্বাচকরাই শেষ কথা। তাঁরাই রাজনৈতিক দলগুলির বিচার করেন। তাই প্রত্যেক দল যদি একমত হয়ে খয়রাতি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলেই এই মামলার নিষ্পত্তি সম্ভব। কিন্তু সর্বদল বৈঠকের সিদ্ধান্ত নাকচ করে দেয় কেন্দ্রীয় সরকার।
গুজরাটে নির্বাচনের আগেই একগুচ্ছ ছাড়ের ঘোষণা করেছে আম আদমি পার্টি। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে বিনামূল্যে সুবিধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা কোনও অপরাধ নয়, এই মর্মে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে ডিএমকে। সেই মামলা প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, খয়রাতি এবং সামাজিক কল্যাণের মধ্যে তফাৎ বুঝতে হবে। তবে মানুষকে বিনামূল্যে সুবিধা দিলে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি হবে বলেই জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।