সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: বিলকিস বানোর (Bilkis Bano) ধর্ষকদের মুক্তি নিয়ে এবার গুজরাট সরকারকে নোটিস দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিলকিসের ধর্ষকদের মুক্তি আদৌ আইন মেনে হয়েছে কিনা, গুজরাট সরকারের কাছে জানতে চাইল শীর্ষ আদালত। আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে হলফনামা পেশ করতে হবে গুজরাটের বিজেপি সরকারকে।
বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই উত্তপ্ত জাতীয় রাজনীতি। এমন নৃশংস অপরাধের সঙ্গে যুক্তদের মুক্তি কেন? এ নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। গুজরাট সরকার (Gujarat Govt) ১১ জন ধর্ষককে মুক্তি দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার বিরুদ্ধে সোজা আদালতে মামলা করেন সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য সুভাষিণী আলি এবং তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র (Mohua Moitra)। এই মামলাগুলির ভিত্তিতেই এদিন গুজরাট সরকারকে নোটিস দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
[আরও পড়ুন: নাবালিকাকে ‘ধর্ষণ’, এক বছর পর বিয়ে, অভিযুক্তকে মুক্তি দিল কর্ণাটক হাই কোর্ট]
এদিনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ জানায়,”এখানে প্রশ্ন হল, গুজরাটের আইন অনুযায়ী এই দোষীদের আদৌ মুক্তি দেওয়া যায় কিনা। আমাদের দেখতে হবে, দোষীদের মুক্তি দেওয়ার আগে কোন কোন বিষয় নজরে রাখা হয়েছে।” শীর্ষ আদালত গুজরাট সরকারের কাছে এই প্রশ্নগুলিরই জবাব চেয়েছে। দু’সপ্তাহ বাদে মামলার শুনানি। তার আগেই জবাব দিতে হবে গুজরাট সরকারকে।
[আরও পড়ুন: ইসলাম আইন অনুযায়ী বিয়ে করতে পারে বয়ঃসন্ধি পার করা নাবালিকারা, রায় দিল্লি হাইকোর্টের]
২০০২ সালে সাবরমতী এক্সপ্রেসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই ব্যাপক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয় গোটা গুজরাট জুড়ে। সেই সময়েই ২১ বছর বয়সি তরুণী বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ করা হয়। ঘটনার সময়ে গর্ভবতী ছিলেন বিলকিস। দাঙ্গার ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময়েই তাঁকে গণধর্ষণ করা হয়। শুধু তাই নয়, তাঁর তিন সন্তানকেও খুন করা হয়। ২০০৮ সালে এগারোজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয় মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত। তাদের মধ্যে ছিলেন দু’জন চিকিৎসক, যারা প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করেছিল। একই অপরাধে কয়েকজন পুলিশকর্মীকেও কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। মেয়াদ ফুরনোর আগেই তাদের মুক্তি দিয়েছে গুজরাট সরকার। যা ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।