সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একটা ভুল বোঝাবুঝি। সেই সূত্রেই আলাপ। এক আলাপেই যাবতীয় ভুল বোঝাবুঝির অন্ত। তার পর শুধুই গান, আড্ডা, আর ঝুলি থেকে বেরিয়ে আসা লজেন্সের মিষ্টি স্মৃতি। ‘লাল পাহাড়ির দেশে’র স্রষ্টা কবি অরুণ চক্রবর্তীর এই স্মৃতিগুলোই সম্পদ সঙ্গীতশিল্পী সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে।
পুজো অ্যালবাম 'ভূমি ইস্পেশাল' প্রকাশিত হওয়ার পর সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও অরুণ চক্রবর্তীর মধ্যে এই ভুল বোঝাবুঝির সূত্রপাত হয়েছিল। অ্যালবামের একটি গান ছিল অরুণ চক্রবর্তীর লেখা। কিন্তু তা তখন সুরজিৎরা জানতেন না। বাউলদের মুখে শুনেছিলেন গানটি। তাই অ্যালবামে কথা ও সুর প্রচলিত লেখা হয়েছিল। এতেই কয়েকজন গিয়ে নাকি কবিকে বলেছিলেন, তাঁর গান দখল করা হয়েছিল। যা শুনে অরুণ চক্রবর্তী ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন। কিন্তু সুরজিৎরা যখন কবির সঙ্গে দেখা করে তাঁকে আসল ঘটনা জানান, তখনই যাবতীয় সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
সুরজিৎকে 'খ্যাপা' বলে ডাকতেন তাঁর প্রিয় 'অরুণদা'। এমন মানুষের প্রয়াণে শোকে কাতর সঙ্গীত শিল্পী। ফেসবুকে প্রয়াত কবির ছবি পোস্ট করে তিনি লেখেন, 'চলে গেলেন 'লাল পাহাড়ির দেশে'র স্রষ্টা আমাদের অরুণদা, কবি অরুণ কুমার চক্রবর্তী। তোমার লেখা গান, কবিতা সারাজীবন মানুষের মনে থেকে যাবে। শুধু তোমার সাথে দেখা হলেই কাঁধের ঝুলি থেকে লজেন্সটা আর কেউ বের করে খাওয়াবে না। যেখানেই থেকো ভালো থেকো, প্রণাম জানাই।'
পরিবার সূত্রে খবর, শারীরিকভাবে সুস্থ ছিলেন অরুণ চক্রবর্তী। শুক্রবার কলকাতার মোহরকুঞ্জে জঙ্গলমহল অনুষ্ঠানেও যোগ দেন। সেখান থেকেই কিছুটা ঠান্ডা লেগেছিল। কবির পুত্রবধূ সুদেষ্ণা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, করোনার পর থেকেই তাঁর ফুসফুসে সমস্যা ছিল। শুক্রবার গভীর রাতে চুঁচুড়ার ফার্ম সাইড রোডের বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে অরুণ চক্রবর্তীর বয়স হয়েছিল ৮০।