shono
Advertisement

রক্তে রাঙানো ‘রুম নম্বর ২২৭’, পাক সেনার অত্যাচারের বর্ণনা বৃদ্ধ লিয়াকতের

মাত্র ১৩ বছর বয়সেই মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয় লিয়াকত। The post রক্তে রাঙানো ‘রুম নম্বর ২২৭’, পাক সেনার অত্যাচারের বর্ণনা বৃদ্ধ লিয়াকতের appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 03:00 PM Dec 16, 2019Updated: 03:00 PM Dec 16, 2019

সুকুমার সরকার, ঢাকা: ১৯৭১ সাল। স্বাধীনতা অর্জনের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে জ্বলছে পূর্ব-পাকিস্তান। বাংলাদেশের জন্ম সময়ের অপেক্ষামাত্র। ক্রমে এগিয়ে আসছিল মুক্তিবাহিনী। ভারতীয় ফৌজের হাতে নাজেহাল পাক সেনা। লড়াইয়ে জুত করতে না পেরে খানসেনা তখন উন্মাদ। এমনই সময় ‘রুম নম্বর-২২৭’-এ ধরে নিয়ে যাওয়া হয় কিশোর লিয়াকত আলিকে। তারপর কী ঘটেছিল, তা মনে পড়লে আজও শিউরে ওঠেন বৃদ্ধ লিয়াকত।

Advertisement

৭১-এর লড়াইয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ শামসুজ্জোহা হলে কনসেনট্রেশন ক্যাম্প বানায় পাকিস্তানের সেনবাহিনী। সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে নারকীয় অত্যাচার চালাত পাক সৈন্যরা। বাদ যেত না নিরীহ মানুষও। ‘মৃত্যু কুঠুরি’ হয়ে দাঁড়ায় হলের ‘রুম নম্বর-২২৭’। একজনকে রাখা যায়, এমন কামরায় অন্তত ১৩ থেকে ১৪জনকে বন্দি করা হত। তারপর রাতের অন্ধকারে বন্দিদের ডাক আসত। সবাই বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ভেসে আসত পরপর গুলির শব্দ। ধৃতদের মেরে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেই গণকবর দিত পাক ফৌজ। ওই ঘরে যাওয়া মানে নিশ্চিত মৃত্যু।

[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে মহাসাড়ম্বরে পালিত হচ্ছে ৪৯তম বিজয় দিবস]

লিয়াকত আলির বাড়ি রাজশাহী নগরের গোড়ামারা মহল্লায়। বাবার নাম ইনসান আলি। ১৯৭১-এর ভারত-পাক যুদ্ধের সময় তাঁর বয়স ছিল ১৩ বছর। বড় ভাই কাসেম আলি ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য। তাঁর সম্পর্কে তথ্য জানতেই সে বছর ১৫ আগস্ট বিকেলে বাড়িতে এসে কিশোর লিয়াকতকে পাকড়াও করে পুলিশ। থানায় জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে পাঠানো হয় ‘রুম নম্বর-২২৭’এ। সেখানে থাকাকালীন পাক সেনার অত্যাচারের সাক্ষী হন কিশোর লিয়াকত। দিনভর কাজের পর পাকিস্তানি সৈনিকদের ফেলে দেওয়া রুটির টুকরো কুড়িয়ে খেতেন তাঁরা।

একদিন রাতে হঠাৎ করেই ওই কক্ষে আরেকজনকে নিয়ে আসা হয়। সারা শরীরে সিগারেটের ছেঁকা। যন্ত্রণায় তাঁর চোখ বেরিয়ে আসছিল। আরেক দিন নিয়ে আসা হয় এক মুক্তিযোদ্ধাকে। তাঁর সঙ্গীরা মারা গেছেন। ধরা পড়েছেন তিনি একা। পেটে বেয়োনেট দিয়ে খোঁচানো হয়েছে।

এভাবেই যাতনার মধ্যে দিন কাটছিল লিয়াকত ও অন্য বন্দিদের। তারপর এল ১৬ ডিসেম্বরের রাত। ডাক পড়ল তাঁর। জীবনের আশা ছেড়ে দিয়ে সার বেঁধে দাঁড়িয়ে পড়লেন বন্দিরা। এই বুঝি গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে গেল শরীর। তবে বন্দিদের অবাক করে দিয়ে তাঁদের মুক্তি দিল প্রহরীরা। তারপর তল্পিতল্পা গুটিয়ে ক্যাম্প ত্যাগ করল পাক সেনা। ক্যাম্পে ফিরে তাঁরা দেখেন, কুঠুরিগুলিতে পড়ে রয়েছে মেয়েদের চুলের গোছা, শাড়ি-ব্লাউজের টুকরো। ওই দিনই ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তান। শেষ হয় যুদ্ধ। প্রচুর রক্তের বিনিময়ে জন্ম নেয় বাংলাদেশ। আর সেই দিনের কথা ভেবে লিয়াকত আজও বলেন, ‘স্বাধীনতা এমনি এমনি আসেনি।’

The post রক্তে রাঙানো ‘রুম নম্বর ২২৭’, পাক সেনার অত্যাচারের বর্ণনা বৃদ্ধ লিয়াকতের appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup ছাঁদনাতলা toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার