সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: নজিরবিহীন ঘটনা রাজ্য বিধানসভায় (West Bengal Assembly)। বগটুই কাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে বিধানসভার অন্দরে বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন তৃণমূল বিধায়করা। মারামারির জেরে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন বিধায়ক। ভাঙা হয়েছে চেয়ার, লাইট। গেরুয়া শিবিরের মতে, ১৬ থেকে ১৭ জন আহত হয়েছেন। তাঁরা সকলেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নাক ফেটে এসএসকেএমে চিকিৎসাধীন তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার। শুভেন্দু অধিকারী-সহ ৫ বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করা হয়েছে চলতি অধিবেশনের জন্য। তবে তাঁদের বিরুদ্ধে যে কঠোর পদক্ষেপ করেছেন স্পিকার, তাতে আগামী বছর পর্যন্ত কোনও অধিবেশনে অংশ নিতে পারবেন না তাঁরা।
এদিকে, বিধানসভার নজিরবিহীন অশান্তির খবর মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে জানান ফিরহাদ হাকিম। ঘটনায় এফআইআরের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ঘটনার রেশ আছড়ে পড়েছে সংসদেও। বিজেপি সাংসদরা বিক্ষোভ দেখান সংসদের বাইরে। লোকসভার অন্দরে পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরব হন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।
অন্যদিকে, এদিনই দিল্লি গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর (Amit Shah) সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar)। বগটুইয়ের ঘটনা নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে খবর।
নজিরবিহীন অশান্তির ঘটনায় বিরোধী দলনেতা-সহ যে ৫ বিজেপি বিধায়ক সাসপেন্ডেড হয়েছেন, সেই তালিকায় রয়েছেন মনোজ টিগ্গা, নরহরি মাহাতো, শংকর ঘোষ, দীপক বর্মণ। যতদিন বিধানসভার এই অধিবেশন চলছে অর্থাৎ বিধানসভার এই অধিবেশন যতদিন ‘প্রোরোগ’ বা স্থগিত করা না হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত সাসপেন্ডেড থাকবেন তাঁরা। কোনও অধিবেশনে অংশ নিতে পারবেন না। স্পিকারের এই শাস্তি ঘোষণার সাংবিধানিক ব্যাখ্যা, চলতি অর্থবর্ষে কোনও অধিবেশনেই থাকতে পারবেন না শুভেন্দু ও এই চার বিজেপি বিধায়ক।
[আরও পড়ুন: বগটুই কাণ্ডের রেশ বিধানসভায়, তৃণমূল-বিজেপির হাতাহাতিতে নাক ফাটল বিধায়কের, ভাঙল চশমাও]
বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক শোরগোল রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে। ফিরহাদ হাকিমের দাবি, ”আরও অনেক বিরোধী দলনেতাকে আমরা দেখেছি। কিন্তু এরকম অরাজকতা সৃষ্টিকারী বিরোধী দলনেতা দেখিনি।” স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ”যে ঘটনা ঘটল, তা অনভিপ্রেত। বিধানসভার নিয়মকানুন নিয়ে পড়াশোনা করেন না। বিধানসভার গুরুত্ব তাঁরা বোঝেন না।” তিনি আরও জানান, ”বিধানসভার সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কী কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার তালিকা তৈরি করা হবে। কীভাবে ক্ষতিপূরণ আদায় করা যায়, সেটা আমরা দেখব।” বিজেপির পালটা দাবি, বিধানসভায় এই অশান্তি তৃণমূলেরই পরিকল্পনা।