সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘ডিসেম্বর তত্ত্ব’ নিয়ে বাজার গরম করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। দিয়েছিলেন তিনটি তারিখ- ১২, ১৪ ও ২১ ডিসেম্বর। সেই ক্রম তালিকা মেনে সোমবারই ছিল ‘ডিসেম্বর ধামাকা’র প্রথম দিন। কিন্তু দিনের শেষে দেখা গেল, ফাঁকা বুলিই সার! দিন পেরিয়ে গেলেও কোনও ধামাকা করতে পারলেন না তিনি। বরং ফের নতুন আরও একটা দিনক্ষণ জানিয়ে রাখলেন শুভেন্দু অধিকারী। এবার তাঁর হাতিয়ার ‘জানুয়ারি’ তত্ত্ব। বললেন, “১৩ জানুয়ারির মধ্যে বড় ডাকাত ধরা পড়বে। এই তারিখটা আর ১৪ ফেব্রুয়ারি হবে না।” যা দেখে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের প্রশ্ন, “১২ ডিসেম্বর তো কেটে গেল? কী হল? কি বারবার নতুন নতুন তারিখ জানাবে?”
১২ ডিসেম্বর কিছু একটা হবে, এই ঘোষণা করে রাজ্য রাজনীতির পারদ চড়িয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। স্বাভাবিকভাবেই এদিন সকাল থেকেই তাঁর কার্যকলাপের দিকে নজর ছিল সকলের। কিন্তু কোথায় কী! তখন মনে করা হচ্ছিল, সন্ধেয় হাজরা মোড়ের সভা থেকে ‘বিস্ফোরণ’ ঘটাতে চলেছেন শুভেন্দু। চমক দিয়ে সভার আগেই নিজাম প্যালেসে ঢুঁ মারেন। মনে করা হচ্ছিল, ইডি-সিবিআই আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করে হয়তো দুর্নীতি সংক্রান্ত নতুন কোনও তথ্য বা নথি তুলে দেবেন তিনি। কিন্তু সেটাও হয়নি। উলটে সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের বিরোধী আক্রমণ শানানোর আগেই বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে খোঁচা দিয়ে বসলেন। যা দেখে রাজনৈতিক মহল বলছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বোমা ফাটানো তো দূরে থাক, নিজেদের দলের ঐক্যই ধরে রাখতে ব্যর্থ বিরোধী দলনেতা।
[আরও পড়ুন: ‘রোজ চরিত্রহনন হচ্ছে, আর কেউ মন্ত্রী হতে চাইবে না’, আদালতে দাঁড়িয়ে বললেন পার্থ]
মঞ্চে দাঁড়িয়ে ডিসেম্বর তত্ত্বের একটা ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন শুভেন্দু। বলছেন, “তিনটি তারিখের কথা বলেছি। কিন্তু তৃণমূলের চোরদের নিয়ে সরকার গড়ব বলিনি। বিচারব্যবস্থা নিয়ে কিছু বলব না। তবে ১৩ জানুয়ারির মধ্যে রাজ্যের সবচেয়ে বড় ডাকাত ধরা পড়বে। এই তারিখটা আর ১৪ ফেব্রুয়ারি হবে না।” তাঁর ডিসেম্বর তত্ত্ব নিয়ে সমালোচনা হবে তা বোধহয় তিনি বুঝতেই পেরেছিলেন। তাই মঞ্চে দাঁড়িয়েই বলে রাখলেন, “আমি বিরোধী দলনেতা। আমি গিমিক করি না। এতগুলো লোকের সামনে বুক ঠুকে বলে গেলাম, রাজ্যের সবচেয়ে বড় ডাকাত, ধেড়ে ইঁদুর ধরা পড়বে।”
এদিন হাজরা সভামঞ্চ থেকে ফের একবার কয়লা দুর্নীতি নিয়ে সরব হন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, “নারদা-সারদার পর এ রাজ্য়ের সবচেয়ে বড় দুর্নীতি-কয়লা দুর্নীতি। ২৪০০ কোটি টাকার দুর্নীতি। এর মধ্যে এক হাজার কোটি একা নিয়েছে বাবুসোন।” এমনকী, কয়লা উত্তোলনকারী সংস্থার ডিরেক্টর কে ছিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
এদিন মেঘালয় সফরে গিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়। আর এদিনই হাজরায় সবা করলেন শুভেন্দু। মেঘালয় সফর নিয়ে তাঁর কটাক্ষ, আগের দিন কাঁথিতে সভা করতে গিয়ে বলেছিলেন, আমি ল্যাজ গুটিয়ে পালিয়েছি। আজ বাবুসোনা ও তাঁর আলোকবর্তিকা কীভাবে পালালেন? ত্রিপুরা, গোয়ায় শূন্য পেয়েছে। মেঘালয়েও বড় শূন্য পাবে।”