shono
Advertisement

শুভেন্দু সভাপতি, বিরোধী দলনেতা শংকর! বাংলায় নয়া ফর্মুলার ভাবনা কেন্দ্রীয় বিজেপির

রাজ্য থেকে মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা কার কার?
Posted: 01:30 PM Aug 02, 2023Updated: 01:31 PM Aug 02, 2023

স্টাফ রিপোর্টার: বঙ্গ বিজেপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রদবদল নিয়ে একটি রফা ফর্মূলার খসড়া তৈরি করেছেন গেরুয়া শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বাংলায় বিজেপির ‘বিবাদমান তিন গোষ্ঠী’র সঙ্গে কথা বলেই ওই ফর্মূলা চূড়ান্ত করার কাজ শুরু করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) ও জেপি নাড্ডা (JP Nadda)। তবে এই রফা ফর্মূলায় ঢুকতে রাজি হননি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। নাড্ডাদের তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘তিনপক্ষকে বুঝিয়ে ফর্মূলা চূড়ান্ত হলে মন্ত্রিসভায় কাদের নাম যাবে ও কারা বাদ পড়বেন সেটুকু আমায় জানিয়ে দিলেই হবে। আমি নামের তালিকা রাষ্ট্রপতি ভবনে পাঠিয়ে দেব।’ অবশ‌্য মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত বঙ্গ বিজেপির তিন গোষ্ঠীর নেতা, দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারীদের সঙ্গে কথা বলে নাড্ডাদের পক্ষে জোড়াতালির ফর্মূলা চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি বলে সূত্রের খবর। দলের তরফে বাংলার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনশল ও সহকারী পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডেকে ফর্মূলা নিয়ে তিন গোষ্ঠীর মধ্যে সমন্বয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন নাড্ডা।

Advertisement

পঞ্চায়েত ভোটে দলের শোচনীয় ফলের জেরে ক্ষুব্ধ দিল্লীর কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বঙ্গ বিজেপিতে বড়মাপের রদবদল করতে চলেছেন। সবদিক বিবেচনা করেই শাহ-নাড্ডারা তিন গোষ্ঠীর তিন নেতাকে পৃথকভাবে নতুন তিনটি পদ দিতে চাইছেন। সেক্ষেত্রে নয়া ফর্মূলায় দিলীপ ঘোষ ও সুকান্ত মজুমদারকে পূর্ণমন্ত্রী হিসাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ও শুভেন্দু অধিকারীকে বঙ্গ বিজেপির সভাপতির আসনে বসাতে চান নাড্ডারা। আর শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari) পরিবর্তে বিরোধী দলনেতার পদে দিল্লি নিয়ে আসতে চাইছে শিলিগুড়ির বিধায়ক ও সুবক্তা শংকর ঘোষকে। রদবদলে সমন্বয় রাখতে গিয়ে উত্তরের দুই নেতাকে সরিয়ে নতুন দু’জনকে এবং দক্ষিণবঙ্গের দু’জনকে দায়িত্বে এনে ভারসাম‌্যর ফর্মূলা তৈরি করেছেন নাড্ডারা।

[আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের জটিলতা কাটাতে নয়া সিদ্ধান্ত, মুখ বন্ধ খামে প্রধানদের নাম পাঠাবে তৃণমূল]

উত্তরবঙ্গের জন বার্লা ও নিশীথ প্রামাণিককে সরিয়ে পরিবর্তে উত্তরের বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্তকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আনার পাশাপাশি শংকর ঘোষকে বিরোধী দলনেতা করার প্রস্তাব রয়েছে। আবার বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকারকে সরিয়ে পরিবর্তে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh) এবং বিরোধী দলনেতার পদ থেকে বঙ্গ বিজেপির (BJP) সভাপতি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে শুভেন্দুকে। কারণ, গেরুয়া পরিষদীয় দলের একাংশ আদি বিজেপির এবং তাঁরা ‘তৎকাল’ বিজেপি শুভেন্দুকে পছন্দ করছে না। কিন্তু স্বয়ং শুভেন্দু সাংবিধানিক পদ বিরোধী দলনেতা ছেড়ে বঙ্গবিজেপির সভাপতি হতে রাজি নন। কারণ, ২০২৪ সালে যদি কেন্দ্রে বিজেপি না ফেরে তবে দলের রাজ‌্য সভাপতির পদ কার্যত গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা শুভেন্দুর। কিন্তু যেহেতু বিরোধী দলনেতার পদটি রাজ্যে ক‌্যাবিনেট মন্ত্রীর সমতূল‌্য, তাই যে কোনও মূল্যে বর্তমান পদ আঁকড়ে ধরে বাড়তি কিছু পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন নন্দীগ্রামের বিতর্কিত বিধায়ক।

[আরও পড়ুন: হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস সত্যি করে জেলায় জেলায় বজ্রপাত-সহ বৃষ্টি, মৃত্যু ৫ জনের]

রদবদলের ফর্মূলায় আরএসএস (RSS) নেতৃত্ব চাইছেন, তাদের সংগঠনের লোক দিলীপ ঘোষকেই ফের বঙ্গ বিজেপির সভাপতি করা হোক। কারণ, দিলীপের সভাপতিত্বের সময়েই লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে বাংলায় গেরুয়া শিবির সবচেয়ে ভাল ফল করেছিল। তিনি সভাপতির দায়িত্ব থেকে সরে আসার পর থেকে রাজ্যে যতগুলি উপনির্বাচন ও পুরসভা এবং পঞ্চায়েত ভোট হয়েছে তার প্রত্যেকটিই বিজেপির ফল শুধু খারাপ হয়নি, ভোটের হারও যথেষ্ট কমেছে। স্বভাবতই আসন্ন লোকসভা ভোটে পদ্ম-শিবিরের কর্মীদের চাঙ্গা করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের টার্গেট পূরণ করতে বঙ্গবিজেপির সভাপতি পদে আরএসএসের ভরসা দিলীপ ঘোষ। বস্তুত এই কারণেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার পরিবর্তে দিলীপকে রাজ‌্য বিজেপির শীর্ষে নিয়ে আসার সুপারিশ করছে আরএসএস। তাৎপর্যপূর্ণ হল, বঙ্গ বিজেপির সভাপতির পদ ছেড়ে মাত্র আটমাসের জন‌্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হতে রাজি হচ্ছেন না বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারও। সুকান্ত ঘনিষ্ঠরা পালটা যুক্তি দিয়েছেন, মন্ত্রী হওয়ার চেয়ে রাজ‌্য সভাপতির পদ অনেক বেশি ‘গ্ল‌্যামারাস’ এবং দৈনন্দিন সংবাদ মাধ‌্যমে ভেসে থাকা যায়। বস্তুত সেই কারণে স্বয়ং সুকান্ত লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha) সময়েও রাজ‌্য সভাপতি পদে থাকতে চান। তবে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত খবর, তিনপক্ষের কেউই নাড্ডাদের ফর্মূলা নিয়ে রাজি হননি। বিশেষ করে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি পদে শুভেন্দুকে দিলীপ ও সুকান্ত, দুই শিবিরের কেউই মেনে নিতে রাজি হচ্ছেন না। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতির হয়ে প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সুনীল বনশল ও মঙ্গল পাণ্ডেরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement