নব্যেন্দু হাজরা: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি আঁচে এবার তপ্ত বিধানসভা। অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করে ‘অযোগ্য’দের চাকরি দেওয়া হল কেন? এসএসসি (SSC) মামলায় এই প্রশ্ন তুলেছে হাই কোর্ট। জবাবও চাওয়া হয়েছে। এবার সেই একই ইস্যু নিয়ে বিধানসভায় সরকার বিরোধিতায় নামল বিরোধী দল। সোমবার বিধনাসভায় এই সংক্রান্ত মুলতুবি প্রস্তাব আনতেই স্পিকার তা খারিজ করে দেন। ‘বিচারাধীন বিষয় আলোচনা নয়’, এই মর্মে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari), মনোজ টিজ্ঞাদের প্রস্তাব খারিজ করে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপরই ওয়াকআউট করে বেরিয়ে আসে বিজেপি। গোটা ক্যাবিনেটের জেল দাবি করেন বিরোধী দলনেতা। গ্রেপ্তার হওয়া নেতা-মন্ত্রীদের নাম করে চলে স্লোগান।
এসএসসি, টেট দুর্নীতি নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। একেকটি মামলার মোড় কোথা থেকে কোন দিকে বেঁকে যাচ্ছে, তা আগাম ঠাহর করতে পারছেন না দুঁদে তদন্তকারীরাও। এই অবস্থায় রাজ্য বিধানসভাতেও (Assembly) সেই আঁচ পৌঁছে গেল। সোমবার অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করে শিক্ষক নিয়োগ মামলা নিয়ে সরব হলেন শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিরোধী বিধায়করা। তাঁরা আলোচনার জন্য মুলতুবি প্রস্তাব আনেন। কিন্তু স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন। তিনি সাফ জানান, এগুলি বিচারাধীন বিষয়। তা নিয়ে কোনও আলোচনা করা যাবে না।
[আরও পড়ুন: ইমেলে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে প্রাণনাশের হুমকি, উত্তরপ্রদেশে গ্রেপ্তার আইআইটির প্রাক্তন ছাত্র]
এরপরই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বিরোধীরা। তাঁরা ওয়াকআউট করে অধিবেশন কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, ”গোটা ক্যাবিনেটের পদত্যাগ চাই, জেল চাই। মন্ত্রিসভা তো বিধানসভার কাছে দায়বদ্ধ। যদিও অবৈধ নিয়োগ নিয়ে কেউ বলেন, মন্ত্রিসভার সুপারিশ অনুযায়ী অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করা হয়েছিল, তাহলে তার দায় তো মন্ত্রিসভাকে নিতেই হবে।” এ বিষয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ”সস্তার রাজনীতি। শুভেন্দুর নাম রয়েছে সিবিআই-এর তালিকায়। তার গ্রেপ্তারি আগে হোক। বিজেপি ভিডিও দেখিয়েছিল। টাকা কে নিয়েছিল? শুভেন্দু। সে যদি বলে, অমুকের বাড়ি যেতে হবে, তাহলে বুঝতে হবে সিবিআই তাদের কথাতেই চলছে।”
অন্যদিকে, আরও একটি ইস্যুতে এদিন বিধানসভা চত্বর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মালদহের মানিকচকের তৃণমূল বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র গুজরাটিদের নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করেছিলেন বলে অভিযোগ তুলে তাঁর বিরুদ্ধে পোস্টার নিয়ে সরব হন বিজেপির মহিলা বিধায়করা। স্বাধীনতা সংগ্রামে গুজরাটিদের ভূমিকা নিয়ে সাবিত্রী মিত্রর মন্তব্যের বিরোধিতা করেন তাঁরা। পোস্টার লেখা – ”দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অপমান করলে কেন? অপদার্থ বিরোধিতার জবাব দাও।” এনিয়ে অবশ্য তৃণমূল সাবধানী অবস্থান নিয়েছে। কুণাল ঘোষের দাবি, ”এটাকে এভাবে বলব না। স্বাধীনতা আন্দোলনে একটা গোটা রাজ্য ছিল না, সেটা বলব না। বাংলা অনেক বেশি আন্দোলন করেছে।”