সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মানুষ তো গাছ না, ফলে তার শিকড় বাইরে থেকে দেখা যায় না। তবু, মানুষের শিকড় আছে। সেই শিকড় হল তাঁর মাতৃভূমি। তাই নিজের গাঁ-গ্রামের কথা বলতে গেলেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে মানুষ। সেখানে যদি কেউ লজ্জায় নিজের গ্রামের নামটাই মুখে আনতে না পারে, তার চেয়ে বিড়ম্বনার আর কিছুই হতে পারে না। সুইডেনের (Sweden) একটি গ্রামের মানুষকে প্রতি মুহূর্তে সেই অস্বস্তির মধ্যেই পড়তে হয়।
আসলে সুইডেনের ওই গ্রামের নাম হল ‘ফাক’। যা জনসমক্ষে মুখে আনেন না এ গ্রামের মানুষ। অথচ অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরা গ্রাম, পাহাড় আর নদীর কোলের সন্তান এই গ্রাম, যা নিয়ে গ্রামবাসী গর্বিতও। কিন্তু নিজেদের এলাকার নামের প্রসঙ্গ এলেই চুপ হয়ে যান মানুষগুলো। স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে, গ্রামের নাম এমন কেন?
[আরও পড়ুন: চোরের উপর বাটপাড়ি! উদ্ধার হওয়া সোনা নিজেদের মধ্যেই ভাগাভাগি করে নিল পুলিশ, তারপর…]
আসলে গ্রামটির গা ঘেঁষে বয়ে গিয়েছে একটি পাহাড়ি নদী। যার নাম ফাকেসজন। ওই নদীর নামের সূত্রেই গ্রামের নাম। এর মধ্যে তো কোনও অন্যায় নেই। ঠিক যেমন হুগলি নদীর তীরে হুগলি জেলা। অথচ গ্রামের নামের কারণে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্লক হয়ে যায় অ্যাকাউন্ট। কাজের জায়গাতেও লোকে বাঁকা নজরে দেখে। বাজে প্রশ্ন করে, প্রতি মুহূর্তে কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়।
ইনস্টিটিউট ফর ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড ফোকলোরের (The Institute for Language and Folklore) তথ্য অনুযায়ী, ১৫৪৭ সালে এই গ্রামটির নাম প্রথমবার রেকর্ড করা হয়। সেই রেকর্ডে এটিকে বর্ণনা করা হয়েছে “একটি হ্রদের ধারে, খুব উঁচুতে একটি পাহাড়ের পাশে খাড়া মাঠ সহ’ এলাকা। সে যাই হোক, প্রাচীন এই নাম আর ব্যবহার করতে চান না গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁরা যত দ্রুত সম্ভব তা বদলে ফেলতে চান। সুইডিশ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এই বিষয়ে লিখিত আবেদনও করেছেন স্থানীয়রা। তাঁরা গ্রামের বিকল্প নাম প্রস্তাব করেছেন। জানিয়েছেন স্থানীয় ভাষায় গ্রামের নাম হোক ‘দালস্রো’, যার অর্থ ‘নিঃশব্দ উপত্যকা’। সরকারি তরফে জানানো হয়েছে, গ্রামবাসীদের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। তবে নাম বদলের প্রক্রিয়ায় কিছুটা সময় লাগবে।
[আরও পড়ুন: সারমেয় সমকামী! অবাক করা অভিযোগে পোষ্যকে বাড়িছাড়া করলেন দম্পতি]
এ গ্রামের মানুষ যে বিড়ম্বনায় পড়েছেন, তা কিন্তু নতুন না। এর আগে সুইডেনেরই একটি শহরতলি, যার নাম ফাকবাই, সেখানকার বাসিন্দারাও নাম বদলে করতে চেয়েছিলেন। যদিও সেই আবেদন গ্রাহ্য হয়নি। অস্ট্রিয়ার একটি গ্রাম অবশ্য একই ধরনের অস্বস্তিতে পড়ে নাম বদলে এখন হয়েছে Fugging। খুশি হয়েছে ফাগিংয়ের মানুষ।