দীপঙ্কর মণ্ডল: প্রাক প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ফের বদলানো হবে রাজ্যের স্কুল সিলেবাস। শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বিকাশ ভবনে নবগঠিত স্কুলশিক্ষা বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক করেন। প্রচলিত সিলেবাস কেমন ছিল তা নিয়ে রাজ্যের ১৩০০ স্কুলে সমীক্ষার সিদ্ধান্ত হয়। শিক্ষামন্ত্রী চান কমিটির মেন্টররা সদস্যদের পাশাপাশি নতুন সিলেবাস নিয়ে জেলার শিক্ষকদের সঙ্গেও কথা বলুন।
কেন্দ্রের বিকল্প রাজ্যের শিক্ষানীতি তৈরি নিয়ে আলাদা একটি বৈঠক হয়। আমেরিকা থেকে সেই বৈঠকে ভারচুয়ালি উপস্থিত ছিলেন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক। স্কুলপাঠ্যের বদলে সুপারিশ চেয়ে প্রচলিত বইগুলি পাঠানো হয়েছিল গায়ত্রীদেবীকে। কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার জানিয়েছেন, তিনি এখনও কিছু পূর্ণ মতামত জানাননি। অন্য সদস্যদেরও এদিন পাঠ্যপুস্তকগুলি খতিয়ে দেখার জন্য দেওয়া হয়। ২ জুন ফের বৈঠকে বসবে কমিটি।
[আরও পড়ুন: ‘এভাবে নির্বাচিত সরকারকে কি ফেলা যায়?’, বঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি খারিজ শাহের]
কয়েকদিন আগে স্কুলশিক্ষা বিশেষজ্ঞ কমিটি ঢেলে সাজিয়েছে স্কুলশিক্ষা দপ্তর। প্রতিটি বিষয়ে একজন করে অধ্যাপককে মেন্টর করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর ওএসডিকে মেম্বার সেক্রেটারি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে আছেন ৯ জন মেন্টর। সদস্য করা হয়েছে ২২ জনকে। ২০১১ সালে তৈরি হয় স্কুলশিক্ষা বিশেষজ্ঞ কমিটি। কমিটির প্রধান কাজ প্রাক প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সিলেবাস দেখভাল করা। প্রয়োজনে সংস্কার বা বদলের সুপারিশ করে কমিটি।
প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন প্রয়াত শিক্ষাবিদ সুনন্দ স্যান্যাল। তিনি ইস্তফা দেওয়ায় চেয়ারম্যান পদে আনা হয় অভীককে। শিক্ষামন্ত্রী এদিনের বৈঠক প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাননি। তাঁর নির্দেশে চেয়ারম্যান বলেন, “নতুন সিলেবাসে ২০১৫ থেকে উচ্চমাধ্যমিক ও ২০১৭ থেকে মাধ্যমিক হচ্ছে। স্বাধীনতার পর থেকে দেশে প্রতি দশ বছরে সিলেবাস সংষ্কার হয়। নিয়ম মেনে রাজ্যে ফের স্কুলপাঠ্যে বদলের কথা চলছে। সদস্যদের প্রচলিত বইগুলি দেওয়া হয়েছে। ২ জুনের বৈঠকে তাঁদের মত গ্রহণ করা হবে।”
রাজ্যের বিকল্প শিক্ষানীতি নিয়েও আলোচনা হয় এদিন। বৈঠকে কয়েকজন সদস্য ভারচুয়ালি যোগ দেন। সম্প্রতি তামিলনাড়ু সরকার রাজ্যের শিক্ষানীতি তৈরির জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়েছে। তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্রের মত অবিজেপি রাজ্যগুলি কেন্দ্রের শিক্ষানীতি কতটা মানছে তা খতিয়ে দেখছেন সদস্যরা। পাশাপাশি, রাজ্যের নয়া সিলেবাসে ‘ন্যাশনাল কারিকুলাম ফ্রেমওয়ার্ক’ বা শিক্ষার অধিকার আইন অনুসরণ করা হবে কি না তার মিমাংসা হয়নি। ডিজিটাল মাধ্যমে পড়াতে প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে জুন মাসের বৈঠকে আলোচনা হবে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের মতও গ্রহণ করবে বিশেষজ্ঞ কমিটি।