সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নেপালের কাছে ক্ষমা চাইতে এবার বাধ্য হল আদিপুরুষ ছবির নির্মাতা টি সিরিজ। কাঠমাণ্ডুর মেয়র বালেন্দ্র শাহকে চিঠি পাঠিয়ে অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ক্ষমা চাইল টি সিরিজ। প্রযোজনা সংস্থার থেকে জানানো হল, শীঘ্রই সীতাকে নিয়ে যে সংলাপে ভ্রান্তি রয়েছে তা বদলে দেওয়া হবে। নেপাল প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, এই ছবি থেকে দয়া করে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হোক।
তা কী নিয়ে এত বিতর্ক?
যে দেশের শালগ্রাম শিলা ভারতে নিয়ে এসে অযোধ্যার রামমন্দিরের মূর্তি তৈরি হয়, সেই নেপালের ভূমিকন্যা এবং তাঁর জন্মসূত্রের ইতিহাসকেই কিনা ভারতীয় সিনেমায় বিকৃত করা হচ্ছে! কিছুতেই হজম করতে পারছে না নেপাল প্রশাসন। এমন অভিযোগ নিয়ে নেটপাড়াতেও শোরগোলের অন্ত নেই। সমস্যার সূত্রপাত ‘আদিপুরুষ’-এর এক সংলাপ নিয়ে। যেখানে দাবি করা হয়েছে- ‘সীতা ভারতের মেয়ে।’
[আরও পড়ুন: বিতর্কে ‘ঘি’! ‘রামের নাম বদনাম কোরো না…’, ‘আদিপুরুষ’কে কটাক্ষ কঙ্গনার]
‘আদিপুরুষ’-এর এমন স্লোগানকে ঘিরেই বিতর্ক তুঙ্গে। ইতিমধ্যেই নেপাল প্রশাসনের তরফে প্রতিবাদ করা হয়েছে। কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন্দ্র শাহর মন্তব্য, “জানকী সম্পর্কিত ভারতীয় সিনেমার এই তথ্য সর্বৈব মিথ্যা। ৩ দিন সময় দিচ্ছি। সিনেমার এই সংলাপ বদলানো না হলে সমস্ত ভারতীয় সিনেমা নিষিদ্ধ করে দেব।”
এদিকে ‘আদিপুরুষ’-এ হনুমানের মুখে বাজারচলতি কথার সংলাপ শুনে দর্শকদের প্রায় মূর্চ্ছা যাওয়ার জোগাড়! যে হিন্দুপন্থীরা জয় শ্রীরাম ধ্বনি তুলে সিনেমার প্রচারে নেমেছিলেন, তাঁরাও চটেছেন। ভারতীয় সংস্কৃতির ‘আদিপুরুষ’-এর এমন অত্যাধুনিক অবতার দেখে তাঁরাও রে-রে করে উঠেছেন! বিপাকে পড়ে নির্মাতাদের তরফে ইতিমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে যে, খুব শিগগিরিই বিতর্কিত সংলাপ বদলে দেওয়া হবে। তবে এতে চিঁড়ে ভিজতে নারাজ! একটা সিনেমার জন্য এবার নেপালে বাজার খোয়াতে বসল ভারতীয় ছবি।
ইতিমধ্যেই কাঠমান্ডুর সমস্ত প্রেক্ষাগৃহে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে ভারতীয় কোনও সিনেমাই যেন প্রদর্শিত না হয়। নেপালের মোট ১৭টি হল থেকে উঠে গিয়েছে ভারতীয় ছবি। সেখানকার প্রশাসনের কড়া নির্দেশ- ‘আদিপুরুষ’-এ সীতার জন্মভূমি নিয়ে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, সেটা যত দিন না বদলানো হচ্ছে, ততদিন সমস্ত ভারতীয় সিনেমা প্রদর্শন বন্ধ থাকবে।
নেপালি সংস্কৃতির ওপর ‘আদিপুরুষ’-এর ভুল প্রভাব পড়বে বলেও আতঙ্কিত সেখানকার প্রশাসন। নেপালের জাতীয়তা, সাংস্কৃতিক ঐক্য ও জাতীয়তার অপূরণীয় ক্ষতি হবে বলে মত তাঁদের। অতঃপর নেপালে যে ওম রাউত, প্রভাস-কৃতীর ছবির পাশাপাশি অন্যান্য ভারতীয় সিনেমার বাজারও যে সাময়িকভাবে বড়সড় ধাক্কা খেল, তা বলাই বাহুল্য।