আফগানিস্তান: ১১৫/৫ (গুরবাজ ৪৩, রশিদ ১৯, রিশাদ ২৬/৩)
বাংলাদেশ: ১০৫/১০ (লিটন ৫৪, তৌহিদ ১৪, রশিদ ২৩/৪, নবীন ২৬/৪)
DLS পদ্ধতিতে ৮ রানে জয়ী আফগানিস্তান।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ম্যাচের শেষে আফগান ক্রিকেটারদের চোখে জল। আর হবে নাই বা কেন? ইতিহাস তৈরি করে কি আবেগকে সংযত রাখা যায়? নাকি রাখার প্রয়োজন আছে? এখন আর 'অঘটন' বলা যায় না। যোগ্য দল হিসেবেই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠল আফগানিস্তান। বাংলাদেশকে হারানো ছিল তার অংশমাত্র। আসলে লক্ষ্যটা অনেক বড়। বিশ্বকাপে (T20 World Cup 2024) শুরু হল সেই রূপকথা।
তাদের কাছে অঙ্কটা ছিল সহজ। বাংলাদেশকে হারাও আর সেমিফাইনালে জায়গা করো। লিখে ফেলো ইতিহাস। আগের দিন ভারত অস্ট্রেলিয়াকে হারানোয় সুবিধাই হয়েছে রশিদ খানদের। অন্যদিকে বাংলাদেশকে শুধু ম্যাচ জিতলেই হত না, অঙ্কের অনেক জটিল গোলকধাঁধা পেরোতে হত। আর নয়তো সেমিতে চলে যাবে অস্ট্রেলিয়া। সেই ম্যাচে মাঝে মাঝেই বাধা হয়ে দাঁড়াল বৃষ্টি। তাতেও ৮ রানে ম্যাচ জিতল আফগানিস্তান (Afghanistan Cricket)। সেমির দৌড় থেকে ছিটকে গেল অস্ট্রেলিয়া।
[আরও পড়ুন: প্রথম ম্যাচেই হোঁচট, কোস্টারিকার সঙ্গে ড্র দিয়ে কোপা অভিযান শুরু ব্রাজিলের]
গোটা ম্যাচটা ঝুলতে লাগল পেণ্ডুলামের মতো। অথচ প্রথম ইনিংসের পর বাংলাদেশের জয় ছিল অবধারিত। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে যেন পুরনো ছন্দই খুঁজে পেল না আফগানিস্তান। তাদের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ব্যর্থ হলেন ব্যাটাররা। রহমানউল্লাহ গুরবাজ (৪৩), ইব্রাহিম জারদানরা (১৮) ৫৯ রানের পার্টনারশিপ গড়লেও নিয়ে নিলেন ৬৫ বল। তার পর আর কেউ দাঁড়াতেই পারলেন না। ওমারজাই (১০), গুলবাদিন নাইব (৪), মহম্মদ নবিরা (১) চূড়ান্ত ব্যর্থ। শেষ দিকে রশিদ খান (১৯) আক্রমণাত্মক ইনিংস না খেললে ১০০ রানও পেরোয় না তাঁদের ইনিংস। শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তান থামল ১১৫ রানে।
লক্ষ্যটা বড় নয়। কিন্তু ধীরেসুস্থে রান তোলার উপায় ছিল না বাংলাদেশের কাছে। কারণ সেমিফাইনালে উঠতে গেলে এই রান তুলতে হত ১২.১ ওভারের মধ্যে। তার মধ্যে বারবার বাধা হয়ে দাঁড়াল বৃষ্টি। সঙ্গে ছিল রশিদ খানের বিষাক্ত স্পিনের ছোবল। একমাত্র লিটন দাস (৫৪) ছাড়া কেউই দাঁড়াতে পারলেন না তাঁর সামনে। ধারাবাহিক উইকেট পড়তে থাকে বাংলাদেশেরও। কিন্তু টানটান ম্যাচে রূপকথা লিখলেন আফগানরা। ১০৫ রানে থামিয়ে দিলেন শান্তদের। আসলে জেতার বাড়তি তাগিদেই হয়তো ম্যাচ ছিনিয়ে নিল তাঁরা। বিপদের মধ্যেও ঠান্ডা মাথা, গোটা দল একাত্ম। একটা করে উইকেট পড়ছে, আর সবার চোখেমুখে ধরা পড়ছে জেতার আগুন। ড্রেসিংরুম থেকে আসছে ক্রমাগত উৎসাহ। একে থামানোর শক্তি আর যার থাক না কেন, বাংলাদেশের ছিল না। অধিনায়কের কাজ করে গেলেন রশিদ খান (২৩/৪)। চোট নিয়েও বল করলেন গুলবাদিন (৫/১)। শেষের দিকে একের পর এক উইকেট তুলে ম্যাচের সেরা হলেন নবীন-উল-হক (২৬/৪)। আসলে তো সেরা গোটা টিমই। সেটাই যেন প্রমাণ করে দিলেন আফগানরা।