দেব গোস্বামী, বোলপুর: ‘দুই প্রাণ হলেও একটিই আত্মা’ ঠিক এই কথাটাই যেন প্রযোজ্য হয় অনুব্রত কন্যা সুকন্যা ও তার বান্ধবী সুতপা পালের জন্য। এবং ইতিমধ্যেই তার প্রমাণও মিলেছে। সুকন্যা গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁর জামাকাপড় এবং ওষুধ দিতে গিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে কার্যত কেঁদে ফেলেন ক্যানসার আক্রান্ত সুতপা। এমনকি সুকন্যার সঙ্গে তাঁকেও যেন গ্রেপ্তার করা হয় সেই আরজি জানান। কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন, “ওর মা নেই। বাবাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন ওকেও গ্রেপ্তার করে নিল। ওর পাশে কেউ নেই। আমি চাই আমাকেও গ্রেপ্তার করুক ইডি। এছাড়া আমি আর কী সাহায্য করতে পারব? আমি নিজের চিকিৎসাই তো চালাতে পারব না।”
বোলপুরের বাঁধগোড়ার বাসিন্দা সুতপা। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। বাবা, মা এবং ভাই ছাড়া সুতপার আর কেউ নেই। সুতপা নিজে ক্যানসার আক্রান্ত। সুতপার পরিবারের সকলেও অসুস্থ। বাবা দুর্গাপ্রসাদ পাল বেশ কয়েক বছর ধরে শয্যাশায়ী। ভাই এবং মা-ও অসুস্থ। একসময় সুতপার বাবার মিষ্টির দোকান ছিল। পরবর্তীকালে লটারি বিক্রি করতেন। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতায় ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়।
[আরও পড়ুন: ‘জনতা আমার কাছে ঈশ্বর’, ‘মন কি বাত’-এর ১০০তম পর্বে আবেগরুদ্ধ মোদি]
বোলপুর গার্লস হাইস্কুলে পড়াশোনা সুতপার। সেখানেই সুকন্যার সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি হয়। ২০২০ সালের ২৪ জানুয়ারি মাতৃহারা হন সুকন্যা। সেই সময় থেকে সুকন্যার সবসময়ের সঙ্গী সুতপা। গত বছরের আগস্টে গ্রেপ্তার হন সুকন্যার বাবা অনুব্রত মণ্ডল। গত আট মাস ধরে কঠিন সময় কাটাচ্ছেন সুকন্যা। সেই সময় দলীয় কর্মী-সমর্থকদের পাশে পাচ্ছেন না বলে ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন খোদ অনুব্রতকন্যা। তবে পাশে ছিলেন সুতপা।
নিজে শারীরিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া সত্ত্বেও বিপদে আপদে সারাক্ষণ বাল্যবন্ধুর পাশে ছিলেন তরুণী। সুতপার এক প্রতিবেশী জানান, “সুতপার চিকিৎসা-সহ তাঁদের পরিবারের খরচ বহন করতেন সুকন্যা এবং অনুব্রত মণ্ডল। দু’জনের গ্রেপ্তারিতে কার্যত অসহায় হয়ে পড়ে গোটা পরিবার। সে কারণেই সুতপা নিজেরও গ্রেপ্তারির দাবি জানান।”