সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় দুই দশকের ‘খোলা হাওয়া’র পর আফগানিস্তানে ফিরেছে তালিবান শাসন। ভারতের আশঙ্কা ছিল, দেশটি জেহাদিদের চারণভূমিতে পরিণত হতে চরলেছে। এবার সেই আশঙ্কা সত্যি করে রাষ্ট্রসংঘের এক রিপোর্টে স্পষ্ট বলা হয়েছে, জইশ-ই-মহম্মদ ও লস্কর-ই-তইবাকে আফগানিস্তানে মদত দিচ্ছে তালিবান।
দীর্ঘদিন ধরেই ভারতে নাশকতা চালাচ্ছে লস্কর ও জইশ। বিশেষ করে কাশ্মীর উপত্যকায় সক্রিয় পাকিস্তানের মদতপুষ্ট এই দুই সংগঠন। সাউথ ব্লকের আশঙ্কা ছিল যে আফগানিস্তানে তালিবান (Taliban) ফেরায় এবার আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে লস্কর ও জইশ। কাশ্মীরে লড়াই চালাতে আফগান জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ হতে পারে বলেও গোয়েন্দা সংস্থাগুলি জানিয়েছিল। এহেন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রসংঘের ‘তালিবান স্যাংশনস কমিটি’ তথা ‘সিকিউরিটি কাউন্সিল কমিটি’র মনিটরিং টিমের একটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, জইশ-ই-মহম্মদ ও লস্কর-ই-তইবার জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে তালিবান। আফগানিস্তানের নানগরহার প্রদেশে জইশের আটটি ট্রেনিং ক্যাম্প রয়েছে। তারমধ্যে তিনটি সরাসরি তালিবান নিয়ন্ত্রণ করে। কুনার ও নানগরহারেও এমনই তিনটি প্রশিক্ষণ শিবির রয়েছে লস্করের।
[আরও পড়ুন: ‘আমি তো মজনু’, আদালতে দাঁড়িয়ে কেন এমন বললেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ?]
২০২১ সালের ১৫ আগস্ট কাবুল দখল করে তালিবান। তারপর থেকে লাগাতার পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছে ‘সিকিউরিটি কাউন্সিল কমিটি’র মনিটরিং টিম। এনিয়ে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ১৫টি রিপোর্ট দিয়েছে তারা। বর্তমানে এই কমিটির চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন রাষ্ট্রসংঘে নিযুক্ত ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি। তালিবান ও পাকিস্তানের (Pakistan) মধ্যে সন্ত্রাস রপ্তানির বিষয়টি নিয়ে আগেও একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। যদিও গত সপ্তাহে দোহায় তালিবান মুখপাত্র সোহেল শাহিন দাবি করেছে, আফগানিস্তানের জমিতে সন্ত্রাসবাদ বাড়তে দেওয়া হবে না। পড়শি দেশগুলির বিরুদ্ধে কোনও কার্যকলাপ চলতে দেওয়া হবে না।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে আফগানিস্তান (Afghanistan) নিয়ে আলোচনায় বসে চিন, রাশিয়া, ভারত, ইরান, তাজিকিস্তান, কিরঘিজস্তান, কাজাখস্তান ও উজবেকিস্তান। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন না পকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মইদ ইউসুফ। আঞ্চলিক নিরাপত্তা আলোচনার চতুর্থ দফায় আফগানিস্তানে শান্তি বজায় রাখতে আঞ্চলিক সহযোগিতা গড়ে তোলার বার্তা দেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল।