সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সময়ের চাকা এগিয়ে গিয়েছে প্রায় ২০ বছর। উগ্রবাদী, কট্টর মানসিকতায় কোনও বদল আসেনি বটে। তালিবান জঙ্গিদের জীবনযাত্রায় বদল আসেনি, তা তো নয়। এখনও আরও ঝকঝকে, স্মার্ট এই জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্যরা। রবিবার কাবুল (Kabul) দখল করে আফগান প্রশাসনের কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতে দেওয়ার পর প্রেসিডেন্ট ভবনে ঢুকে যেভাবে জিম (Gym) করতে দেখা গেল তাদের, তাতেই স্পষ্ট হয়, শুধু সন্ত্রাসেই নয়, আধুনিক জীবনযাপনেও হাত পাকাচ্ছে তারা। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে এই সব ছাপিয়ে একটাই প্রশ্ন বড় হয়ে উঠছে। এবার থেকে আফগানিস্তান (Afghanistan) শাসন করবে তালিবান, কিন্তু দেশ চালানোর মতো এত অর্থ হাতে আসবে কোথা থেকে? একটা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের কোষাগার এত ফুলেফেঁপে উঠছে কীভাবে? উত্তর খুঁজতে গিয়ে চোখ প্রায় কপালে ওঠার জোগাড়। বছরে নাকি প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার (USD) হাতে আসে তাদের।
২০১৬ সালে তালিবানের অর্থভাণ্ডার নিয়ে একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। তাতেই উঠে এসেছে চমকপ্রদ বেশ কয়েকটি তথ্য। এতদিন জানা ছিল, মাদক পাচার, তোলাবাজি করেই নিজেদের খরচ জোগাড় করে নিজেরা। কিন্তু ২০১৬ সালের সমীক্ষা বলছে অন্য কথা। বিশ্বের ১০টি জঙ্গি সংগঠনের মধ্যে সম্পদশালী হিসেবে তালিবানের স্থান পঞ্চম। শীর্ষে রয়েছে ISIS। তাদের বার্ষিক আয় ২ বিলিয়ন ডলার। আর তালিবানের বার্ষিক আয় ৪০০ মিলিয়ন ডলারের আশেপাশে। কী কী ভাবে তাদের অর্থপ্রাপ্তি ঘটে? ফোর্বসের সমীক্ষা বলছে, অন্তত ৬ টি পথে অর্থাগম হয় তাদের ভাঁড়ারে।
[আরও পড়ুন: Taliban capture Afghanistan: কাবুল ছাড়ার মরিয়া চেষ্টায় বিমানবন্দরে জনসমুদ্র, চলল গুলি]
খননকাজ, মাদক পাচার, বিদেশি ত্রাণ, রপ্তানি, ট্যাক্স, রিয়েল এস্টেট – এই ছটি ক্ষেত্র থেকে অর্থ রোজগার করে। সবচেয়ে বেশি আয় হয় খননকাজ আর মাদক পাচার থেকে। আর এই অর্থেই ফুলেফেঁপে উঠেছে তালিবানের কোষাগার। আর তাতেই বদলেছে জীবনযাত্রা। পুরনো অস্ত্রের বদলে এখন তাদের হাতে ঝকঝকে পশ্চিমী অস্ত্র, পরনে ঐতিহ্যবাহী পোশাকই, তবে তা নতুন। পুরনো আমলের গড়িয়ে গড়িয়ে চলা গাড়ি নয়, গোটা দেশের মসৃণ গতিতে চড়ে বেড়াচ্ছে জঙ্গিদের ঝাঁ চকচকে সব গাড়ি। সবচেয়ে বড় কথা, তারা এখন ভালমন্দ খাওয়া-পরার পাচ্ছে। জঙ্গিদলে যোগ দেওয়ার জন্য যদি দারিদ্র্যকে দায়ী করা হয়, তাহলে এখন যে সেই প্রেক্ষাপট বদলেছে, তা স্পষ্ট। তালিবানের অন্দরে আর দারিদ্র্য নেই। ধনী থেকে ধনীতর হচ্ছে।