তরুণকান্তি দাস: একদিনে এক কোটি। ২৮ জানুয়ারি বিশেষ লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা বা গ্রাহক তৈরির বিশেষ অভিযান চালিয়েছিল ডাক বিভাগ (Postal Department)। দেখা গেল, গত এক মাস ধরে ডাক পরিষেবার সুফল নিয়ে প্রচার চালানোর পরও সেই সংখ্যার ধারে কাছে পৌঁছতে পারল না দপ্তর। মেরে কেটে প্রায় সাড়ে ১২ লাখের মধ্যেই থেমে গেল সেই অভিযান। ফলে রবিবারও বহু যায়গায় ছুটি বাতিল করে কাজ করেছেন ডাক বিভাগের কর্মীরা। কিন্তু তাতেও কোটি দূর অস্ত তার এক চতুর্থাংশ আমানত টেনে আনা যায়নি। এবং যা অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে, তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সার্কেলের সেভিংস অ্যাকাউন্টের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
দিল্লিতে (Delhi) ডাক বিভাগের অ্যাসিস্টান্ট ডিরেক্টর টি সি বিজয়নকে ফোনে ধরা হলে বলেন, ‘‘আমরা লক্ষ্য নিয়ে নেমেছিলাম। মানুষের মধ্যে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মানুষের কাছে পরিষেবা বেশি করে পৌঁছে দিতে তাঁদের ডাকঘরে টেনে আনাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। যা অনেকটাই সফল হয়েছে।’’
[আরও পড়ুন: দেশবাসীকে অনশনের ডাক, লাদাখ বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীকে বার্তা সোনম ওয়াংচুকের]
কখনও সার্ভার ডাউন। কোনওসময় আবার নথিগত সমস্যা। সুদের হার গত বছরও কম থাকা-সহ নানা কারণে ডাক বিভাগ গ্রাহক হারাচ্ছিল। সবচেয়ে বড় সমস্যা দেখা দিয়েছিল, সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলা নিয়ে। যা থেকে ক্রমশ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিলেন শহর বা মফস্বলের মানুষ। গ্রামাঞ্চলে অবশ্য আমানত কিছুটা বাড়ছিল। এই অবস্থায় ডাক বিভাগ অনলাইন লেনদেনে জোর দিয়ে অনেকটা সাফল্য পেয়েছিল। কিন্তু গ্রাহক সংখ্যা না বাড়ালে সমস্যা মিটবে না তা বুঝতে পেরেই কিছুদিন আগে থেকেই জানুয়ারি মাসের ২৮ তারিখে বিশেষ গ্রাহক বা আমানত সংগ্রহ অভিযানে নামার কথা ঘোষণা করেছিল ডাক বিভাগ। কিন্তু এজেন্টদের কমিশন কমিয়ে দেওয়াসহ নানা সমস্যার কারণে তাঁরা সেভাবে সক্রিয় ভূমিকা নেননি বলে খবর। তাই লক্ষ্যমাত্রার এক চতুর্থাংশ পূরণ হয়নি।
[আরও পড়ুন: মমতার পথেই মোদি! কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি নিয়ে মানুষের ঘরে পৌঁছনোর বার্তা মন্ত্রীদের]
তার মধ্যেও পশ্চিমবঙ্গে শনিবার, একদিনেই নতুন সেভিংস অ্যাকাউন্ট খুলেছেন প্রায় সাড়ে বারো হাজার মানুষ। যা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। গুজরাটে সেখানে সংখ্যাটা মাত্র ৩২০৫। হিমাচল, পাঞ্জাব, রাজস্থানে হাজার দেড়েক করে সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলানো গিয়েছে। উত্তরাখণ্ডে সংখ্যাটা মাত্র এক হাজার। দিল্লিতে সংখ্যাটা মাত্র ২৯৩ এবং উত্তরপ্রদেশে প্রায় ১০ হাজার। তবে টার্ম ডিপোজিটের ক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশ সবাইকে টেক্কা দিয়েছে। প্রায় দেড় লাখ মানুষ একদিনে এই খাতে টাকা রেখেছেন। কেন্দ্র সবচেয়ে বেশি যে প্রকল্প নিয়ে প্রচার করে থাকে, সেই পিপিএফ-এর অ্যাকাউন্ট খোলায় চরম অনীহা দেখা দিয়েছে। এত প্রচারের পরও শনিবার সারা দেশে মাত্র সাড়ে সাত হাজার নয়া পিপিএফ অ্যাকাউন্ট খোলানো গিয়েছে। যার মধ্যে এই রাজ্যের ৫১৪ জন রয়েছেন। এই হতাশাজনক ফলের পিছেন ডাক বিভাগের পরিষেবায় খামতি ও এজেন্টদের কমিশন কমিয়ে ক্রমশ নিস্ক্রিয় করে দেওয়াকে দায়ী করছে সংশ্লিষ্টমহল।