সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে OMR শিট সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC)ভর্ৎসনার মুখে পড়ল সিবিআই (CBI)। সোমবার দুপুর ২ টোর পর আদালতে রিপোর্ট জমা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। রিপোর্ট দেখেই অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বলেন, ”মানিক ভট্টাচার্যকে জিজ্ঞাসাবাদের কোনও তথ্য এই রিপোর্ট থেকে পাচ্ছি না।” তাতে তারিখ উল্লেখ করে সিবিআই জানায়, মানিক ভট্টাচার্যকে ৫বার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। OMR-এর ডিজিটাইজেশন এবং রিসাইকেল করার সিদ্ধান্ত কি তিনিই নিয়েছিলেন? এই প্রশ্নের উত্তরে মানিক ভট্টাচার্য জানান, এই সিদ্ধান্ত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে নেওয়া হয়েছিল।
এরপর বিচারপতির মন্তব্য, ”মানিক ভট্টাচার্যর যা বক্তব্য, সেটা শুনেই বোঝা যায় যে মানিক ভট্টাচার্য কার্যত একা হাতেই এই দুর্নীতিতে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন। বক্তব্যের শেষে মানিক ভট্টাচার্যর স্বাক্ষর নেননি কেন? কোনও আইনি বাধা আছে? যে কোনও চালাক লোক পরবর্তী ক্ষেত্রে বলবে যে এই বক্তব্য আমার নয়। তিনি একজন বিধায়ক (MLA)। এই ধরনের মামলায় এগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনাদের মনে হতেই পারে যে শুধু জিজ্ঞাসাবাদ করা আপনাদের কাজ, কিন্তু আপনাদের মাথায় রাখতে হবে যে আদালত এই মামলার নজরদারি করছে। এই ছোট ছোট জিনিস কি আমাকে শিখিয়ে দিতে হবে? নাকি আপনার মনে করছেন যে এটা তেমন গুরুত্বপূর্ণ মামলা নয়?”
[আরও পড়ুন: চাপে নতিস্বীকার, ক্লাস প্রতি ১০০ টাকা সাম্মানিকের নোটিস প্রত্যাহার তপনের কলেজের]
সিবিআইয়ের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট বিচারপতির মানিক ভট্টাচার্যকে (Manik Bhattacharya) ‘রাজপুত্র’ বলে অ্যাখ্যা দেন। তাঁর আরও বক্তব্য, ”এরা তো সব মহাপুরুষ। এদের কবে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন?” সিবিআই স্বীকার করে, কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা বাকি আছে। তাতে বিচারপতির আরও প্রশ্ন, ”কবে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন? লোকসভা ভোটের দিন ঘোষণার পরে? আপনাদের রিপোর্ট খুবই অস্পষ্ট। আপনারা যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছেন বলে আমার মনে হচ্ছে না।” তিনি আরও বলেন, ”অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করুন। পাখির পালক দিয়ে হাওয়া করলে হবে না। নেতাদের বিপুল সম্পত্তি কোথা থেকে এল, এই প্রশ্ন কেউ তুলবে না? মানুষ এখন ভাবতে শুরু করেছে যে সুবিচার হবে না। কারোর কিচ্ছু হবে না। সবাই ভোট দাঁড়িয়ে ড্যাং ড্যাং করে জিতে যাবে।” যে হাই কোর্টের সূর্য সেনের মূর্তি থেকে পদযাত্রা শুরু করে সুন্দরবন পর্যন্ত যাওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশও করেন বিচারপতি।