shono
Advertisement
Paschim Medinipur

নিয়োগ হয়নি শিক্ষক, ধুঁকছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ২৫০টি মাধ্যমিক স্কুল

কী বলছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শিক্ষা দপ্তর?
Published By: Subhankar PatraPosted: 04:30 PM Jun 27, 2024Updated: 05:40 PM Jun 27, 2024

শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: নামেই স্কুল। চারিদিক ঝোপ জঙ্গলে ভর্তি। লোহার গেটে জং ধরেছে।   কোনও স্কুলে শিক্ষক নেই, তো কোথাও পড়ুয়া নেই। ছাত্রছাত্রীরা জানাচ্ছে,  শিক্ষক নেই তাই তারা স্কুলমুখী হচ্ছে না । আবার যে স্কুলে শিক্ষক আছে, সেখানে পড়ুয়া নেই। অভিযোগ, ফলে ধুঁকছে জেলার মাধ‌্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রগুলি। মাধ‌্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রগুলির শিক্ষকদের অভিযোগ, সরকারি অবহেলার শিকার তাঁরা। আর শিক্ষক না থাকার ফলে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে পড়ুয়া ও তাদের অভিভাবকরা। অভিযোগ, শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ার ফলে ধুঁকছে পশ্চিম মেদিনীপুরের আড়াইশোর মতো মাধ‌্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র। ফলে একের পর এক বন্ধ হতে বসেছে জেলার মাধ‌্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রগুলি। অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে শিক্ষকদের ভবিষ‌্যৎ।

Advertisement

একইভাবে ধুঁকছে জেলার শিশুশিক্ষা কেন্দ্রগুলিও। নিখিল বঙ্গীয় মাধ‌্যমিক শিক্ষা সম্প্রসারক ও সহায়িকা সমিতির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক প্রশান্ত দিন্ডা বলেন, "মূলত শিক্ষকের অভাবে জেলার সমস্ত মাধ‌্যমিক ও শিশুশিক্ষা কেন্দ্রগুলি বন্ধের পথে। একের পর এক শিক্ষক-শিক্ষিকা অবসর নিলেও নিয়োগ বন্ধ সেই ২০০৯ সাল থেকে। আসলে প্রথাগত শিক্ষার বাইরে, এই শিক্ষাকেন্দ্রগুলির জন‌্য এই সরকারের কোনও ভাবনা নেই। মনে হয় যেন এই শিক্ষাকেন্দ্রগুলি উঠিয়ে দিতে চায় সরকার। আমরা বারবার এই বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।"

[আরও পড়ুন: ‘রাজভবনের যা কীর্তি, মেয়েরা ভয় পাচ্ছে’, দুই বিধায়কের শপথ জটিলতায় রাজ্যপালকে নিশানা মুখ্যমন্ত্রীর]

কী বলছে পশ্চিম মেদিনীপুর (Paschim Medinipur) জেলা শিক্ষা দপ্তর? জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ‌্যক্ষ শ‌্যামপদ পাত্র জানিয়েছেন, "গোটা বিষয়টি রাজ‌্য সরকারের বিবেচনাধীন। রাজ‌্য সরকারের এই নিয়ে কোনও নির্দেশিকা এসে পৌঁছয়নি। সামনের স্থায়ী সমিতির সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। তবে বেশ কিছু মাধ‌্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র ও শিশু শিক্ষাকেন্দ্র বন্ধ হয়ে পড়েছে আবার কিছু বন্ধের পথে।" কেন্দ্র সরকারের নির্দেশিকা মেনে বাম আমলে স্কুলছুট পড়ুয়াদের শিক্ষাদানের জন‌্য স্কুলবিহীন গ্রামগুলিতে মাধ‌্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র (এমএসকে) ও শিশু শিক্ষাকেন্দ্র (এসএসকে ) গড়ে তোলা হয়।

প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির জন‌্য শিশু শিক্ষাকেন্দ্র এবং পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির ‌পড়ুয়াদের জন‌্য মাধ‌্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র গড়া হয়েছিল। প্রথাগত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলে এই শিক্ষাকেন্দ্রগুলির শিক্ষকদের বলা হয় শিক্ষা সহায়িকা ও শিক্ষা সম্প্রসারক। মাসিক বেতনের বদলে তাঁদের সামান‌্য মাসিক ভাতা দেওয়া হয়। ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু বাধ সাধে রাজ্যের পালাবদলের পর। শিক্ষাকেন্দ্রগুলিতে শেষ নিয়োগ হয়েছিল ২০০৯ সালে। তার পর থেকে আর নিয়োগ হয়নি। ফলে একের পর এক শিক্ষক অবসর নেওয়ার ফলে শিক্ষকহীন হয়ে পড়েছে শিক্ষাকেন্দ্রগুলি। আর শিক্ষক না থাকার ফলে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে পড়ুয়ারা।

এই মুহূর্তে পড়ুয়ার অভাবে ৬৫টির মতো এমএসকে বন্ধ হয়ে পড়েছে বলে দাবি করেছেন প্রশান্তবাবু। তিনি বলেন, "জেলায় শুরুতে মোট ২৩৪টি এমএসকে ছিল। এখন বন্ধ হতে হতে ১৬৯টির মতো টিকে রয়েছে। সেগুলিতে কোথাও পড়ুয়ার সংখ‌্যা চার থেকে পাঁচজন। আবার কোথাও ১০০র বেশিও পড়ুয়া রয়েছে। শিক্ষক না থাকলে পড়ুয়া ভর্তি হবেই বা কেন?" ঘাটাল ব্লকেও দুটি এমএসকে ধুঁকছে বলে জানিয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বিকাশ কর। তিনি বলেন, "মাধ‌্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র ও শিশু শিক্ষাকেন্দ্রগুলি অবহেলার শিকার হয়ে পড়েছে। শিক্ষক না থাকার ফলেই ধুঁকছে শিক্ষাকেন্দ্রগুলি।"

[আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাপস সাহা-ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেত্রীকে তলব, বৃহস্পতিবারই হাজিরার চিঠি সিবিআইয়ের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • একের পর এক বন্ধ হতে বসেছে জেলার মাধ‌্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রগুলি।
  • অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে শিক্ষকদের ভবিষ‌্যৎ। একইভাবে ধুঁকছে জেলার শিশুশিক্ষা কেন্দ্রগুলিও।
  • একইভাবে ধুঁকছে জেলার শিশুশিক্ষা কেন্দ্রগুলিও।
Advertisement