দীপঙ্কর মণ্ডল: রাজ্যের দুই মেগা পরীক্ষায় দু’রকম নিয়ম নিয়ে উঠল প্রশ্ন। আগামী বছর হোম সেন্টারেই পরীক্ষা দেবে উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়ারা। মাধ্যমিকের ছাত্র ছাত্রীদের যেতে হবে অন্য স্কুলে। এছাড়াও একটিতে টেস্ট আবশ্যিক অন্যটিতে তা ঐচ্ছিক। মঙ্গলবার দু’টি পরীক্ষা একই নিয়মে নেওয়ার দাবি এল স্কুলশিক্ষা দপ্তরে। একই দাবি পরীক্ষার্থীদের একাংশেরও।
অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টারস অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসস–এর সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি স্কুলশিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও দপ্তরের সচিবকে চিঠি পাঠিয়ে বলেছেন, কোভিড এখনও পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। এই কারণে উচ্চমাধ্যমিকের মতো মাধ্যমিকও হোম সেন্টারেই নেওয়া হোক। উল্লেখ্য, যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ ২০২২ সালের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সূচি ঘোষণা করে। কিন্তু একই রাজ্যের অধীন দুই সংস্থা পরীক্ষার আলাদা আলাদা নিয়মের কথাও জানায়।
[আরও পড়ুন: Coronavirus Update: একদিনে কলকাতায় সংক্রমিত ২৪৯, দিওয়ালির মুখে উদ্বেগ বাংলার কোভিড গ্রাফে]
প্রধান শিক্ষকদের সংগঠনের দাবি, পর্ষদ এবং সংসদ এই রকম পরিস্থিতিতে দু’রকম পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারে না। তাঁদের প্রশ্ন, হোম সেন্টারে সংসদ পরীক্ষা নিতে পারলে পর্ষদ কেন পারবে না। সংসদ স্কুলগুলোর উপর টেস্ট পরীক্ষা নেওয়া বা না নেওয়ার বিষয়টি ছেড়ে দিলেও পর্ষদ টেস্ট পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলছে। চন্দনবাবুর বক্তব্য, “সারা বছর পঠন-পাঠন কার্যত বন্ধ ছিল। স্কুল ও মাদ্রাসাগুলিকে মাধ্যমিকেও টেস্ট পরীক্ষা ঐচ্ছিক করার নির্দেশ দেওয়া হোক। দু’রকম পদ্ধতি গ্রহণ করলে ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবক মহলে ক্ষোভের সঞ্চার হবে।”
শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী একই দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “যত কঠিন পরিস্থিতি আসুক না কেন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দুটি বড় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হোক। কোনওভাবেই তা যেন বাতিল না হয়। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হোমসেন্টারে হবে বলে ঘোষণা হয়েছে অথচ মাধ্যমিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে তা করা গেল না কেন। বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে দুটো পরীক্ষাই হোম সেন্টারে নেওয়া বাঞ্ছনীয়। দুটি পরীক্ষার ক্ষেত্রে দু’রকম দৃষ্টিভঙ্গি বাঞ্ছনীয় নয়।” বৃহত্তর গ্র্যাজুয়েট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনও তাই মনে করে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৌরেন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, “আমরা চাই পরীক্ষা নেওয়া হোক। তবে একই রাজ্যের অধীনে দশম এবং দ্বাদশে আলাদা আলাদা পদ্ধতিতে পরীক্ষা কেন নেওয়া হচ্ছে তার কোনও ব্যাখ্যা নেই। মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক দু’টি পরীক্ষাই অভিন্ন নিয়মে হওয়া উচিত।”