সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের কলকাতার রাজপথ সাক্ষী থাকল শিক্ষক বিদ্রোহের। ন্যায্য বেতনের দাবিতে আবারও পথে নামলেন রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ। মঙ্গলবার দক্ষিণ কলকাতায় কয়েক হাজার প্রাথমিক শিক্ষক বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তাদের লক্ষ্য ছিল, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে বিক্ষোভ দেখানো। কিন্তু, শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে পৌঁছানোর আগেই তাঁদের বাঘাযতীন মোড়ে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ।
উল্লেখ্য, লোকসভা ভোটের আগে আগে কলকাতা উত্তাল হয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলনে। ন্যায্য বেতন অর্থাৎ পিআরটি স্কেলের দাবিতে কয়েকজন শিক্ষক ১৪ দিন অনশন করেন উস্তি ইউনাইটেড নামের একটি সংগঠনের নেতৃত্বে। আন্দোলনের চাপে পড়ে শিক্ষকদের অধিকাংশ দাবি মেনে নেই সরকার। পিআরটি স্কেল অনুযায়ী বেতন দেওয়া না হলেও, তাঁদের গ্রেড পে এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। প্রাথমিক শিক্ষকদের যাদের গ্রেড পে ছিল ২৬০০ টাকা তাঁদের করা হয় ৩৬০০ টাকা। শিক্ষকদের দাবি, গ্রেড পে বাড়ানো হলেও তাঁরা প্রত্যাশামতো বেতন পাচ্ছেন না। গ্রেড পে হাজার টাকা বাড়লেও পে ব্যান্ডের কোনও পরিবর্তন হয়নি। ফলে কারও হয়তো হাজার টাকাই মাইনে বেড়েছে, তো কারও ২ হাজার টাকা। সেই সঙ্গে, অভিজ্ঞ শিক্ষকরাও অতিরিক্ত ভাতা পাচ্ছেন না। এই অভিযোগগুলি শিক্ষকদের ওই সংগঠনটি শিক্ষামন্ত্রীকেও জানায়। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: জয়েন্টের প্রশ্নপত্রে বাংলা ভাষাকে উপেক্ষা, আন্দোলনের হুঁশিয়ারি মমতার]
দাবি পূরণ না হওয়ায় বুধবার ফের রাস্তায় নামার সিদ্ধান্ত নেন কয়েক হাজার প্রাথমিক শিক্ষক। এদিন দক্ষিণ কলকাতায় কয়েক হাজার শিক্ষক বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে জড়ো হন। এদিন যাদবপুর এইট-বি বাসস্ট্যান্ড থেকে নাকতলায় শিক্ষামন্ত্রীর বাড়ির উদ্দেশ্যে শিক্ষকদের একটি মিছিল যাচ্ছিল। কিন্তু, প্রশাসন আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল। শিক্ষকদের বিক্ষোভের কথা মাথায় রেখে বাঘাযতীন চত্বর রীতিমতো দুর্গে পরিণত করে পুলিশ। সেখানেই আটকে দেওয়া হয় শিক্ষকদের। কয়েক হাজার শিক্ষক পুলিশের কাছে বাধা পেয়ে সেখানেই বসে পড়েন ধরনায়। এর ফলে এলাকায় ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা এখনও ধরনায় বসে আছেন। বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তাঁরা বিক্ষোভ প্রত্যাহার করেননি। পরে শিক্ষামন্ত্রীর কড়া বার্তার পর বাঘাযতীন মোড় থেকে তাঁরা সরে যান একটি পার্কে। সেখানেই অবস্থান বিক্ষোভ চলছে।