সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'নহি যন্ত্র নহি যন্ত্র, আমি প্রাণী'... সত্যজিৎ রায়ের 'হীরক রাজার দেশে' ছবির ক্লাইম্যাক্সে গুপির গান মনে পড়ে? যন্ত্র ও প্রাণের এই বিভেদ বুঝি এবার ঘুচতে চলেছে। ওপেনএআই ও মেটা যেখানে বিরাট ল্যাঙ্গোয়েজ মডেল তৈরিতে ব্যস্ত, চিন হাঁটছে অন্য পথে। তারা ঢুকে পড়েছে মস্তিষ্ক-কম্পিউটারের ফিউশনের দুনিয়ায়। যেখানে মস্তিষ্ক এবং কম্পিউটারের সার্কিট মিলিয়ে মিশিয়ে মানুষ ও যন্ত্রকে এক করে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
কেবলই আরও স্মার্ট ফোন কিংবা রোবট সহকারী নয়, এভাবেই বিরাট এক বিপ্লবের সৃষ্টি করতে চলেছে চিন। এআই নিয়ে গোটা বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে যখন তীব্র প্রতিযোগিতা, সেখানে একেবারে অন্যভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় শীর্ষস্থানে পৌঁছতে চাইছে বেজিং। এখনও এবিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি, কেননা গোপনে গবেষণা চালানো হচ্ছে। তবে যেটুকু গবেষণাপত্র কিংবা সরকারি নীতি সংক্রান্ত নথি অথবা গুঞ্জন সামনে এসেছে তা থেকেই বোঝা যাচ্ছে, কতটা সুদূরপ্রসারী পথে হাঁটছে চিনা গবেষকরা।
ব্রেন-কম্পিউটার ইন্টারফেস গবেষণা যাকে এককথায় বিসিআই বলে, সেই সংক্রাম্ত গবেষণায় অনেকটাই নাকি এগিয়ে গিয়েছে চিন। মানুষের মতো আচরণ করা যন্ত্র কিন্তু তৈরি করতে চাইছেন গবেষকরা। সোজা কথায় মস্তিষ্ক ও কম্পিউটারের সার্কিট একযোগে কাজ করবে- এটাই লক্ষ্য। অর্থাৎ মানুষ ও যন্ত্রের মধ্যেকার বিভেদরেখাটাই মুছে ফেলতে চাইছেন তাঁরা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কেউ মনে মনে ইমেল করার কথা ভাবলে মস্তিষ্কের সঙ্গে লেগে থাকা যন্ত্র সরাসরি মেল করে দেবে। এটা নিছকই সহজ উদাহরণ। আরও জটিল ও আপাত অসম্ভব কাজও করতে চাইছেন চিনের গবেষকরা।
শুনতে যতই ভয়ংকর মনে হোক, এটা মানতেই হবে চিন অনেকটা এগিয়ে ভাবতে শুরু করেছে। তারা ভবিষ্যৎকে কেবলই আরও স্মার্ট যন্ত্রের মধ্যে আবদ্ধ রাখতে রাজি নয়। বরং মাংস ও ফাইবারের ভিতরে যে তফাত, সেটা মুছে ফেলাই তাদের লক্ষ্য। সায়েন্স ফিকশন ছবিতে যা দেখা গিয়েছে, তা কি সত্যিই বাস্তব হতে পারে? সেই উত্তর দেবে চিনের এই গবেষণা।
