সুমন করাতি, হুগলি: সাইবার জালিয়াতির একাধিক ঘটনা সামনে আসছে। অনলাইন প্রতারণার মাধ্যমে লক্ষ, কোটি টাকা খোয়ানোর ঘটনাও ঘটেছে। পুলিশ তদন্তে নেমে একাধিক প্রতারককে গ্রেপ্তারও করেছে। এবার আরও এক প্রতারণার ঘটনা সামনে এসেছে। অনলাইন সংস্থা বিগ বাস্টেকের নাম ক্লোন করে অনলাইন মার্কেটিংয়ের নকল ওয়েবসাইট করা হয়েছিল। ওই ওয়েবসাইটকে আসল ভেবে অনেকেই কেনাকাটা করেছেন। সেসব ব্যক্তির ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডের তথ্য তুলে নিয়ে তারপর চলত প্রতারণা! ঘটনায় মহম্মদ আফসার নামে এক যুবককে হুগলির পাণ্ডুয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ ও বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য যাচাই করে এই তথ্য সামনে এসেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
হুগলি জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সরকার এই বিষয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন। তিনি জানান, গত ১৬ জুলাই একটি প্রতারণার অভিযোগ পাণ্ডুয়া থানায় দায়ের হয়েছিল। তদন্তে নেমে পাণ্ডুয়ার শেখপুকুর বালিখাদ এলাকা থেকে বছর ২৬-এর মহম্মদ আফসারকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর তারপরই উঠে আসতে থাকে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, একটি প্রতিষ্ঠিত অনলাইন সংস্থার ওয়েবসাইট ক্লোন করা হয়েছিল। নিজের ফেসবুক পেজ থেকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রচারও শুরু হয়েছিল। বহু সাধারণ মানুষ সেই ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রতারিত হতে থাকেন বলে অভিযোগ।
বহু মানুষের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের তথ্য হাতে চলে আসে ওই যুবকের কাছে। পরবর্তীতে সেসব তথ্যের মাধ্যমে বহু সাধারণ মানুষের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নেওয়া হত বলে অভিযোগ। প্রায় দু'মাস ধরে এই কারবার চলছিল বলে অভিযোগ। ধৃত ওই যুবককে আদালতের নির্দেশে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। ধৃত যুবক একটি বাড়ির দোতলার ঘরভাড়া করে এই কারবার চালাচ্ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। ধৃতের থেকে উদ্ধার হয়েছে ২৩টি সিমকার্ড, ৮টি ব্যবহার করা মোবাইল ফোন। এছাড়াও পাওয়া গিয়েছে ৫০ হাজার টাকা। মিলেছে ব্যবহার না করা চারটি মোবাইল ফোন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, এনসিআরপি-তে অনেক মামলা রেজিস্ট্রার করা হয়। এই মামলাটি ছাড়াও মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা-সহ আরও তিন-চারটি রাজ্যে অভিযোগ হয়েছে। পুলিশের অনুমান, প্রায় কোটি টাকার ওপরে প্রতারণা হতে পারে। এখনও অবধি প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা পুলিশ উদ্ধার করতে পেরেছে।
