সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্রমেই আতঙ্কের অপর নাম হয়ে উঠছে 'ডিজিটাল অ্যারেস্ট'। কয়েকদিন আগেই ইডি জানিয়েছিল, গত ১০ মাসে এই প্রতারণার শিকার হয়ে ২,১৪০ কোটি টাকা খুইয়েছেন সাধারণ মানুষ। থাইল্যান্ড, হংকং, লাওসের মতো একাধিক দেশ থেকে ভারতের মাটিতে চলছে এই প্রতারণা। এবার সামনে এল মুম্বইয়ের এক ২৬ বছরের যুবতীর নিগ্রহের ঘটনা। অভিযোগ, ভিডিও কলে তাঁকে পোশাক খুলতে বাধ্য করে প্রতারক। ছিনিয়ে নেয় ১ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা।
ঠিক কী হয়েছিল? পুলিশের দায়ের করা এফআইআর থেকে জানা যাচ্ছে, গত ১৯ নভেম্বর রাতে ওষুধ সংস্থার যুবতী কর্মী একটি ফোন পান। সেই ফোনের উলটো দিকে থাকা প্রতারক নিজেকে দিল্লির পুলিশ অফিসার বলে দাবি করে। সে জানায়, ওই তরুণীর বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী নরেশ গোয়েলের আর্থিক দুর্নীতির মামলায় যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন নম্বর থেকে ফোন করতে থাকে সে। দাবি করে, গ্রেপ্তার করা হবে ওই তরুণীকে। তাঁকে বাধ্য করে একটি হোটেল রুম করতে। সেখানে তাঁর 'ভার্চুয়াল' শুনানি হবে বলে দাবি করে প্রতারক।
এর পর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট যাচাইয়ের অজুহাতে তরুণীর অ্যাকাউন্ট থেকে ১.৭৮ লক্ষ টাকা সরিয়ে নেয় অভিযুক্ত। সেই সঙ্গেই 'বডি ভ্যারিফিকেশনে'র অজুহাতে ভিডিও কলে একে একে পোশাক খুলে সম্পূর্ণ নগ্ন হতে বাধ্য করে ওই যুবতীকে।
গত ২৮ জুন পুলিশের দ্বারস্থ হন যুবতী। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার নানা ধরায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়। তাকে শনাক্ত করার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। উল্লেখ্য, সম্প্রতি এই ডিজিটাল অ্যারেস্ট নিয়ে উদ্বেগের সুর শোনা গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গলায়। ‘মন কি বাত’ রেডিও অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, যেভাবে ডিজিটাল অ্যারেস্টের মাধ্যমে মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে তা বিপজ্জনক।
এই ধরনের ঘটনায় অযথা ভয় না পেয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে এই ধরনের ফোনকল রেকর্ড করার পরামর্শ দেন মোদি। বলেন, কোনও সরকারি তদন্তকারী সংস্থা অনলাইনে কাউকে ধমক বা হুমকি দেয় না। এবং এমন ফোন এলে ন্যাশনাল সাইবার হেল্পলাইনে ফোন করার কথা বলেন। এর পর এই প্রতারণা রুখতে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে। এর মধ্যেই ফের ডিজিটাল গ্রেপ্তারির শিকার হলেন মুম্বইয়ের ওই যুবতী।