ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: মল্লারপুরে (Mallarpur) নাবালকের মৃত্যু ঘিরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। গেরুয়া শিবিরের দাবি নিজেদের হেফাজতে থাকাকালীন তাকে খুন করেছে পুলিশ। যদিও সে অভিযোগ বারবারই খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে পুলিশের দাবিতেই সিলমোহর। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই রিপোর্টে নাবালকের গলায় দড়ির দাগ পাওয়া গিয়েছে। এছাড়া অন্য কোনও ক্ষতচিহ্ন পাওয়া যায়নি। তাই গলায় দড়ি দিয়েই নাবালক আত্মহত্যা করেছে বলেই মোটের উপর নিশ্চিত পুলিশ।
এদিকে, মল্লারপুর কাণ্ডে বোলপুর সার্কিট হাউসে বীরভূমের জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা এবং জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী। তার আগে শনিবার নাবালকের পরিজনদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। কথা বলেন নাবালকের মায়ের সঙ্গেও। নিহত নাবালকের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে বলেও জানান অনন্যা চক্রবর্তী। কোনও নাবালকের মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয় বলেই দাবি রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সনের।
[আরও পড়ুন: হু হু করে ঢুকছে দামোদরের জল, এখনও শুরু হয়নি দুর্গাপুর ব্যারেজের লকগেট মেরামতির কাজ]
উল্লেখ্য, ঘটনার সূত্রপাত গত বৃহস্পতিবার। চুরির অভিযোগে মল্লারপুরের বারুইপাড়ার বাসিন্দা শুভ মেহেনা নামে এক নাবালককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। গভীর রাতে মৃত্যু হয় শুভর। এরপরই পুলিশের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন মৃতের পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন অমানসিক অত্যাচারের কারণেই মৃত্যু হয়েছে শুভর। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের শাস্তির দাবিও জানান তাঁরা। পরে যদিও নিজেদের বয়ান বদল করেন ওই নাবালকের বাবা-মা। আত্মহত্যা বলেই দাবি করেন তাঁরা। বিজেপির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলেই দাবি মল্লারপুর থানার পুলিশের। তাঁদের কথায়, “পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন শুভ। পুলিশ কর্মীরা তাঁকে কোনওরকম নিগ্রহ করেনি।” এই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার মল্লারপুরে বন্ধ ডাকে বিজেপি (BJP)। মল্লারপুর বাজার থেকে থানা পর্যন্ত মিছিল করে গেরুয়া শিবির। তাতে নেতৃত্ব দেন সৌমিত্র খাঁ। মিছিল শেষে থানায় ঢুকতে গিয়ে বাধা পান বিজেপি নেতা। তারপর তুমুল অশান্তিও হয়। সৌমিত্র খাঁ ওসির শাস্তির দাবি জানান। সুবিচারের দাবিতে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হওয়ার কথাও বলেন তিনি।