শম্পালী মৌলিক: চল্লিশ বছরেরও বেশি সম্পর্ক। বয়সে ছ-সাত বছরের ছোট। কিন্তু আন্তরিকতা এত, যে তাঁকে বাবা বলে ডাকতেন আর তাঁর স্ত্রী বলতেন মা। উস্তাদ রাশিদ খানের স্মৃতিচারণায় প্রখ্যাত সরোদশিল্পী তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার (Tejendra Narayan Majumdar)।
রাশিদ খানের মৃত্যুর খবর পেয়েই হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন। কিন্তু বুধবার আর রবীন্দ্রসদনে যাবেন না। এভাবে যে প্রিয় মানুষটাকে দেখতে পারবেন না তেজেন্দ্রনারায়ণ।
ফোনে যোগাযোগ করা হলে শিল্পী বলেন, “ওর বিয়ের সময় আমার স্ত্রী ওকে সাজিয়ে দিয়েছিল। আমার স্ত্রীকে ও মা ডাকত। আর কত ঘণ্টা যে আমরা কাটিয়েছি ওর বাড়িতে, আমার বাড়িতে, স্টেজ শেয়ার থেকে শুরু করে আড্ডা, গল্প… কী বলব আর!”
[আরও পড়ুন: ‘আগের রাতেও পরিবারের সঙ্গে গল্প-আড্ডা চলেছে, হঠাৎ…’, রাশিদ প্রয়াণে শোকাহত রুদ্রনীল]
শেষের দিকে শরীর খারাপ হওয়ার পর তো বোধহয় দেখাও করা হয়নি? প্রশ্ন শুনেই বললেন, “না, ওটা একটু আফসোস রইল যে আমরা ঠিক ভালো করে জানতে পারলাম না। দেখা হয়েছে আনেকদিন আগে। ফোনে কথা হয়েছে। একটা সময় তো রেগুলার একবার-দুবার করে ফোনে কথা হতো। তার পর আমাদের নিজেদেরও ব্যস্ততা বেড়ে গেল।”
শেষ দেখা কি বছর খানেক আগে? প্রশ্নে শিল্পীর উত্তর, “সম্ভবত। আমার ছেলের রিসেপশনে আসতে পারেনি। পরে জানতে পারি ও হাসপাতালে ভর্তি ছিল। আমার সঙ্গে ওর শেষ কথা হয়েছে অক্টোবর মাসে। রাশিদ বলেই ডাকতাম। ও আমাকে বাবা বলে ডাকত। ‘বাবা তুই কেমন আছিস?’ এতটাই সহজ-সরল ছিল। আমার বাড়িতে এসে পান বানাতে বানাতে রাগ গাইত। আমার স্ত্রীকে পান বানিয়ে দিত। আমার স্ত্রী শুধু ওর হাতে সাজা পানই খেত। বলত, ‘মা এই পানটা নাও। কী রাগ শুনবে?’ আমার স্ত্রী বলতো এই রাগটা কর। আমি, বিক্রম, রাশিদ… আমি আসলে বলার মতো অবস্থায় নেই।”