টেলি আঙিনায় নস্টালজিয়ার ছোঁয়া নিয়ে ফিরছে ‘টেলিপ্লেক্স’। লিখছেন সোমনাথ লাহা।
লাইট, সাউন্ড, ক্যামেরা, অ্যাকশনের আবহে একসময় টেলিভিশনের আঙিনাতেই সাতরঙের রূপকথার সন্ধান পেয়েছিল বাঙালি দর্শকরা। ছোটপর্দার সেই অনন্য গাথা রূপ ছিল টেলিফিল্ম। কাহিনি, বিষয় ভাবনা, বৈচিত্রের দিক থেকে সময়ের থেকে অনেকখানি এগিয়ে থাকা সেই সমস্ত টেলিছবি দর্শকদের সামনে মেলে ধরেছিল বিনোদনের নতুন সংজ্ঞা। রীতিমতো জনপ্রিয় ও সমাদৃত হওয়া সেই সমস্ত টেলি ছবির পরিচালক ছিলেন প্রভাত রায়, সন্দীপ রায়, অঞ্জন দত্ত, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, পার্থ সেনরা। তেমনই ওই সমস্ত টেলি ছবির শিল্পী তালিকাতেও ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়, সব্যসাচী চক্রবর্তী, কৌশিক সেন, অরিন্দম শীল, মুনমুন সেন, রাইমা সেনের মতো প্রথিতযশা তথা জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রীরা।
এবার আরও একবার টেলি দুনিয়ার সেই নস্টালজিয়াকেই দর্শকদের সামনে নিয়ে আসছে কালার্স বাংলা। তাদের পুরনো টেলি ছবিগুলির মধ্যে থেকে বাছাই করে প্রায় ৮০টি টেলি ছবিকে নিয়ে শুরু হতে চলেছে ‘টেলিপ্লেক্স’, যেটির ট্যাগলাইন ‘বাড়ি বসে বিনোদন’। এক অর্থে নতুন মোড়কে পুরনো টেলিছবির স্বাদ আরও একবার ছোটপর্দায়। ওই সমস্ত টেলিছবিগুলিকে কালার কারেকশন, ডিজিটাইজেশন করে দর্শকদের সামনে নিয়ে আসতে চলেছে কালার্স বাংলা।
১১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ‘টেলিপ্লেক্স’র সূচনা হতে চলেছে সন্দীপ রায় পরিচালিত ফেলুকাহিনি ‘ডাঃ মুন্সির ডায়েরি’র হাত ধরে। তালিকায় রয়েছে প্রভাত রায়ের ‘যখন চাঁদ’, ‘হয় তো অন্যরকম’ অঞ্জন দত্ত পরিচালিত ‘শর্টকাট’, ‘ঘর’, ‘কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘পলাতক’, ‘উল্কা’, ‘কোলাজ’-র পাশাপাশি পার্থ সেন, প্রয়াত দেবাংশু সেনগুপ্ত, যিশু দাশগুপ্তর মতো পরিচালকদের তৈরি ছবিও।
[ হেলেনকে নকল করা বোকামো! ‘মুংড়া’ নিয়ে মুখ খুললেন সোনাক্ষী ]
তবে চমক রয়েছে অন্য জায়গায়। জনপ্রিয় এই টেলি ছবিগুলিকে নতুন করে দর্শকদের সামনে পৌঁছে দেবেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। তিনিই এক অর্থে সূত্রধরের মতোই। টেলি ছবিগুলির শুরুতে, মাঝখানে বিরতিতে এবং শেষে ওই সমস্ত টেলি ছবির পরিচালক, কলাকুশলীদের সঙ্গে আলাপচারিতার মধ্য দিয়ে সৃজিত দর্শকদের সমানে নিয়ে আসবেন টেলি ছবিগুলিকে ঘিরে অজানা নানা কাহিনি ও ছবি তৈরির নেপথ্যের ঘটনাগুলিকে।
সম্প্রতি কালার্স বাংলা চ্যানেলে ‘টেলিপ্লেক্স’-এর সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সৃজিত মুখোপাধ্যায় ও কালার্স বাংলার চ্যানেলের বিজনেস হেড রাহুল চক্রবর্তী। সৃজিতের কথায়, “এই প্রস্তাবটা যখন আমার কাছে আসে তখন এটা নিয়ে আমি দু’বার ভাবিনি। বেঙ্গালুরুতে যখন কর্পোরেট হাউসে আমি চাকরি করতাম তখন রাত্রে এই টেলি ছবিগুলোই আমায় ভীষণরকমভাবে অনুপ্রাণিত করত। টেলি ছবিগুলির বিষয়ভাবনা, অভিনয়, শর্ট টেকিং, ট্রিটমেন্ট বাংলা ছবির দুনিয়ায় আমূল পরিবর্তন নিয়ে এসেছিল। ওই গল্পগুলো দেখে চিত্রনাট্য-সংলাপ লেখা কীভাবে হতে পারে তার ধারণা পেয়েছিলাম আমি। অঞ্জনদা, কৌশিকদার তৈরি ওই সমস্ত টেলি ছবিগুলি আমাকে নাড়া দিয়ে গিয়েছিল। আর তাই ‘শেষকৃত্য’, ‘আমার বাবা’, ‘কোলাজ’-এর মতো শর্ট ফিল্মগুলো আমার ভীষণ প্রিয়। এমনকী আমি কৌশিকদার সহকারীও হতে চেয়েছিলাম ওঁর এই কাজগুলো দেখে। এখন আমি তাঁদেরই সহকর্মী। আর এই অনুষ্ঠানের সৌজন্যে আবার তাঁদের সঙ্গে গল্প করার, আড্ডা দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছি, এটা ভেবেই ভাল লাগছে।”
তবে আগামী দিনে নিজে অবশ্য টেলিছবি তৈরি করতে চান না সৃজিত। কারণ সেখানে নতুনভাবে কিছু দেওয়ার তাই নেই বলেই মনে করেনি তিনি। কালার্স বাংলায় বিজনেস হেড রাহুল চক্রবর্তীর মতে, “ভাল জিনিসের কোনও এক্সপায়ারি ডেট হয় না। ‘টেলিপ্লেক্স’ সেই একরাশ ভাল ছবি। যেগুলো দর্শক এখনও দেখতে পছন্দ করবেন বলেই আমাদের বিশ্বাস।” ‘টেলিপ্লেক্স’ দেখা যাবে ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে কালার্স বাংলায় প্রতি সোম থেকে শুক্র রাত ১০টায়।
[ ক্যানসারের ক্ষত সর্বসমক্ষে আনলেন আয়ুষ্মানের স্ত্রী তাহিরা ]
The post নতুন মোড়কে ফিরছে পুরনো দিনের টেলিছবি, সূত্রধর সৃজিত appeared first on Sangbad Pratidin.