সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রতিবারের পুজোর মতোই এইবছরের পুজোয় বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান রয়েছে অভিনেত্রী মানসী সেনগুপ্তের। তবে সবকিছুর মধ্যেই যা অত্যন্ত স্পেশাল এই বছর তা হল দ্বিতীয় সন্তান গোল্লা কোলে আসার পর এতাই অভিনেত্রীর প্রথম পুজো। আর তাই এই পুজোটা একটু অন্যরকমভাবে কাটানোর প্ল্যান রয়েছে মানসীর। ঠিক কীভাবে এই পুজো কাটাবেন অভিনেত্রী তা জানতেই সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল যোগাযোগ করেছিল অভিনেত্রীর সঙ্গে। চূড়ান্ত ব্যস্ততার মাঝে ফোনের ওপার থেকে মানসী ভাগ করে নেন তাঁর পুজো প্ল্যান।
এই বছরটা যেহেতু খুব স্পেশাল তাই কী কী প্ল্যান থাকবে জানতে চাওয়ায় অভিনেত্রী বলেন, "প্রতি বছরই পুজোর ছুটিতে বাইরে বেড়াতে চলে যাই। এই বছরেও যাব তবে পুজোর শুরুতেই নয় বরং এবার নবমীতে বেরোব। আসলে এই ভাবনা তার কারণ, আমার ছেলের এটা প্রথম পুজো। তাই কলকাতার পুজোয় ও একটু থাকুক পরিবারের সঙ্গে। পুজোর কটা দিন কাটিয়ে আমরা বেরোব। পাহাড় হবে এবার আমাদের ডেস্টিনেশন। তবে ওকে নিয়ে এতটা জার্নি কীভাবে করব তা নিয়ে আমার মনে অনেক সংশয় ছিল। তাই বিমানে না গিয়ে ট্রেনেই যাচ্ছি। যেহেতু এটা ওর প্রথম বাইরে বেড়াতে যাওয়া তাই অনেক কিছুই মাথায় রাখতে হয়েছে।"
মানসীর পুজোর নস্ট্যালজিয়া বলতে কী মনে পড়ে? মানসী বলেন, "পুজো মানেই সব ভাইবোনেরা একসঙ্গে হব এটাই ছিল আমাদের ছোটবেলার পুজো প্ল্যান। বাবা সঙ্গে নিয়ে বেরোতেন, মোগলাই খাইয়ে আমাদের বাড়ি নিয়ে চলে আসতেন। খুব কড়া শাসনে রাখতেন বাবা। তাই আমার ছোটবেলার পুজো প্রেম বলেও কিছু হয়নি। আর এখন তো সেসবের সুযোগ নেই। তাই ছোটবেলার পুজোর প্রেমের কোনও স্মৃতি আমার নেই।" পুজোয় বেড়তে গিয়ে কলকাতার পুজোকে কি মিস করেন? অভিনেত্রী বলেন, "পুজোয় বাইরে থাকার ফলে খুবই কলকাতার পুজো মিস করি। বাঙালি হয়ে দূর্গাপুজো মিস করব না তা কী করে হয়? কিন্তু এতবড় ছুটি যা পুজোর সময় পাই তা তো সারা বছর আর পাই না। তাই বাধ্য হয়েই এই লম্বা ছুটিতে যখন শুটিং বন্ধ থাকে তখন বেড়াতে চলে যাই। আমার বোনও যেহেতু অভিনয় করে তাই এই ছুটিটা ও নিজেও উপভোগ করতে চাই। তবে এইবছর সুযোগ থাকায় ও নিজেই বলল যে, আমরা এইবছর কলকাতায় পুজোর দুদিন থেকে যাই। অন্যবছর যখন ফিরি তখন পুজো শেষ হয়ে যায়। তবে এই বছর কলকাতার পুজো দেখে তারপর বেরব।"
পুজোয় খাওয়াদাওয়ার কী প্ল্যান জানতে চাইলে মানসী বলেন, "আমরা বাঙাল। তাই অষ্টমীতে নিরামিষ খাওয়ার নিয়ম আমাদের নেই। পুজোটা তাই আমরা বেশ রসেবশে থাকব। যত রকম খাবার পছন্দ খাব। আমার পুজোর অষ্টমীতে মাটন চাইই চাই। মাটন ছাড়া আমার অষ্টমী কাটে না। আর ভোগ খাব। আমি ভীষণ ভোগ খেতে ভালোবাসি। এমনকি রাস্তায় যাওয়ার সময় কোথাও যদি দেখি ভোগ দেওয়া হচ্ছে আমি নিজে গাড়ি দাঁড় করিয়ে ভোগ নিই। আর মা দূর্গাও বোধহয় সেটা বুঝেই এবছর পুজোয় বিচারকের ভূমিকায় ভোগ চেখে দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন আমাকে। কারণ আমাকে প্রতিটা আবাসনে গিয়ে ভোগ চেখে দেখতে হবে।"
পুজোর শপিং কতদূর অভিনেত্রীর? আসলে, চূড়ান্ত ব্যস্ততার মাঝে এই মুহূর্তে শপিং করলেও শুধু পুজো নয় বরং ছেলে গোল্লার জীবনের প্রথম বড় অনুষ্ঠান নিয়েও বাড়িতে চূড়ান্ত ব্যস্ততা। রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ছেলের অন্নপ্রাশনের কেনাকাটার মাঝেই এই খবর দিলেন মানসী। বললেন, "আমার ছেলের বিয়ে। যদিও অন্নপ্রাশন, কিন্তু বিয়ের সমান আয়োজনই হচ্ছে বাড়িতে। শপিং চলছে সেই উপলক্ষ্যে। পুজোর শপিং তাই সেভাবে শুরু হয়নি।" শুটিংয়ের ফাঁকে সেসবই সারছেন মানসী। এদিনের প্ল্যানিং নিয়ে মানসী জানান, "মাসের দ্বিতীয় রবিবার অনুষ্ঠান রেখেছি। যাতে আমাদের সমস্ত বন্ধুবান্ধবেরা আসতে পারেন। ছেলের গয়না, জামাকাপড় কেনা নিয়েই সমস্ত প্ল্যান চলছে। পুজোর কেনাকাটা খুব একটা করতে পারিনি। রবিবারের অনুষ্ঠান মিটলে তারপর পুজোর কেনাকাটা করার সুযোগ পাব। তবে গোল্লার ইতিমধ্যেই পঞ্চাশের ওপর জামা হয়েছে। সেখান থেকেই একটা ধুতি-পাঞ্জাবী অষ্টমীর অঞ্জলিতে ওকে পরাব।" অন্নপ্রাশনের দিনের আয়োজন সম্পর্কে জানতে চাইলে মানসী বলেন, "যেভাবে সব আয়োজন করছি তাতে যেন মনে হচ্ছে ছেলের বিয়েই হচ্ছে। আমার যেহেতু ভাই নেই তাই আমার বাবাই ছেলেকে মুখে প্রসাদ দেবে।" একইসঙ্গে এদিনের মেনুও ভাগ করে নেন মানসী। কী থাকছে অভিনেত্রীর ছেলের অন্নপ্রাশনের মেনুতে? মানসী বলেন, "স্টার্টারে রয়েছে রেশমি কাবাব, চিকেন পকোড়া, মকটেল, লস্যি থেকে মেইন কোর্সে বাটার নান, চানা মশলা, চিকেন, মাটন, ইলিশ মাছ ভাপা, ফিশ ফ্রাই, রাবড়ি, মিষ্টি, আইসক্রিমের মতো বিভিন্ন পদ।"
