সুকুমার সরকার, ঢাকা: বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষ উপলক্ষে নতুন করে সেজে উঠছে বাংলাদেশ (Bangladesh)। তৈরি হচ্ছে একাধিক ভাস্কর্য, স্থাপত্য। বাংলাদেশের ইতিহাসকে তুলে ধরতে রাজশাহী কলেজের দেওয়ালে টেরাকোটার (Teracotta) অপূর্ব সাজ নজর কেড়েছে ইতিমধ্যে। বলা হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের ভাষ্য এই টেরাকোটার কাজ। রাজশাহী কলেজের কলাভবনের দেওয়ালে এই কাজ করেছেন রাঢ় শিল্পী সৈয়দ মামুনার রশিদ। নাম দেওয়া হয়েছে – ‘উদয়াস্তে বাংলাদেশ’।
টেরাকোটার কাজে রাজশাহী (Rajshahi College) কলেজের ১৬০ বর্গফুট দেওয়াল যেন জীবন্ত ইতিহাস। গত নভেম্বর থেকে এই কাজে হাত দিয়েছিলেন শিল্পী সৈয়দ মামুনার রশিদ। নকশায় তাঁকে সাহায্য করেছেন প্রখ্যাত এক ডিজাইনার। প্রায় তিন মাস পর কাজ শেষে বুধবার এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান। দেওয়ালটি রাজশাহী কলেজের কলাভবনের সামনে থেকেই চোখে পড়বে। দেশভাগের কাহিনি জানা যাবে টেরাকোটার কাজে। প্রথম ছবিতে দেখা যায়, দেশভাগের যন্ত্রণা নিয়ে বাড়িঘর ছেড়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শরণার্থীদের নতুন ঠিকানার খোঁজে বেরনোর দৃশ্য। তারপর রয়েছে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে মিছিল। এরপর আন্দোলনে স্লোগানমুখর এক নারীর মুখ। তাঁর হাতে ধরা প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘‘ছয় দফাভিত্তিক স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে।’’
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ঢুকছে মায়ানমারের মাদক, টেকনাফে উদ্ধার লক্ষাধিক ইয়াবা ট্যাবলেট]
বৃহস্পতিবার দেখা যায়, কয়েকজন শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে মন দিয়ে ছবিগুলো দেখছেন। ফারিহা নামে একজনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমরা আজকের প্রজন্মের কেউ দেশভাগের দুর্ভোগের শিকার হইনি, ভাষা আন্দোলন দেখিনি, মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, শুধু বইপুস্তক পড়ে যেটুকু জেনেছি। এই দেওয়ালের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মনে হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ, দেশভাগ বা ভাষা আন্দোলনের সময়টার ভিতর দিয়ে যাচ্ছি।’’ শিল্পী সৈয়দ মামুনার রশিদ বলেন, ‘‘কাজ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আমরা প্রকৃতি ও দেশের ইতিহাস ঐতিহ্যের দিকটা বিবেচনা করি। যেমন রাজশাহী কলেজের টেরাকোটায় বাংলাদেশকে তুলে আনার কাজটি করে আমরা আনন্দ পেয়েছি।’’বর্ষীয়ান নাগরিকদের মত, নতুন করে ইতিহাসের সঙ্গে টেরাকোটার সম্পর্ক বুঝিয়ে দিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই কারুকাজ।