সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উচ্চ আদালতের নির্দেশের পর থেকেই নরমে-গরমে বোঝানোর পালা চলছিল। সল্টলেকের করুণাময়ী চত্বর থেকে অবস্থানরত টেট (TET) চাকরিপ্রার্থীদের উঠে যেতে হবে। ১৪৪ ধারা মোতায়েন থাকায় সেখানে জমায়েত নিষিদ্ধ। সেই কারণে বিক্ষোভকারীদের ওই জায়গা ছেড়ে চলে যেতে হবে। বৃহস্পতিবার দিনভর বারবার মাইকিং করে এমনই ঘোষণা করছিল পুলিশ। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় মধ্যরাতে অভিযানে নামল পুলিশ। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসের সামনে থেকে শান্তিপূর্ণভাবেই হঠিয়ে দেওয়া হল বিক্ষোভকারীদের।
তবে অভিযোগ, অনেককে টেনেহিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়েছে। পুলিশি অভিযানের পর থেকে নিখোঁজ ৩ আন্দোলনকারী। এর প্রতিবাদে আজ রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বাম যুব সংগঠন DYFI.
[আরও পড়ুন: পরীক্ষা পিছোতে দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়াকে খুন, গুরুগ্রামের অভিযুক্তকে জামিন দিল সুপ্রিম কোর্ট]
বৃহস্পতিবার হাই কোর্ট রায়ে জানিয়েছিল, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কার্যালয়ের সামনে জারি থাকা ১৪৪ ধারা অমান্য করা যাবে না কোনওভাবেই। এই মর্মে পুলিশকেও দায়িত্ব দিয়েছিল আদালত। এপিসি ভবনে যাতে সরকারি কর্মী, আধিকারিকরা নিরাপদে যাতায়াত করতে পারেন, তার দায়িত্ব ছিল পুলিশের। টেট আন্দোলনকারীদের ধরনার কারণে সেই নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয়, সেদিকেও নজর ছিল হাই কোর্টের (Calcutta HC)। সেইমতো পুলিশও কাজ শুরু করে। প্রথমদিকে মাইকিং করে আন্দোলনকারীদের সরে যেতে বলা হয়। বারবার হাই কোর্টের রায়ের কথা উল্লেখ করেন পুলিশ অফিসাররা। কিন্তু তাঁরা নিজেদের দাবিতে অনড় ছিলেন। চাকরির নিয়োগপত্র না পেলে কোনওভাবেই অনশনের রাস্তা থেকে সরবেন না, সাফ জানিয়েছিলেন ২০১৪’র টেট উত্তীর্ণরা।
[আরও পড়ুন: ‘টাটারা তো আমাদের বিরুদ্ধে ভোটে বিজ্ঞাপনও দিয়েছিল’, ফের ঝাঁজালো আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রীর]
এমনকী ধরনা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে রাতারাতি হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন তাঁরা। রাতেই দ্রুত শুনানির আরজি জানান। পরে তাঁরা কৌশল বদল করে গোটা চত্বরে একসঙ্গে জমায়েতের বদলে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে জারি রাখেন অনশন। রাতের দিকে করুণাময়ীর বিক্ষোভ চত্বরে যান DYFI যুব সম্পাদিকা মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়।
কিন্তু আদালতের নির্দেশকে শিরোধার্য করে তা প্রয়োগে বাধ্য ছিল পুলিশও। তাই মাঝরাতে অভিযান চালিয়ে বিক্ষোভকারীদের হঠিয়ে দেওয়া হয়। মাত্র ১৫ মিনিটেই তাঁদের সকলকে নিয়ে যাওয়া হয়। অনশনে যাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, তাঁদের অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে পুলিশ। কয়েকজনকে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। অভিযোগ, পুলিশ রীতিমতো দমনপীড়ন চালিয়েছে। টেনেহিঁচড়ে সবাইকে সরানো হয়েছে। ইতিমধ্যে ৩ জন চাকরিপ্রার্থীর খোঁজ মিলছে না বলে অভিযোগ।