অর্ণব আইচ: নিয়োগ দুর্নীতির ‘কিংপিন’ মানিক ভট্টাচার্য ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের অজস্র ব্যাংক অ্যাকাউন্টের হদিশ। মৃত ব্যক্তির সঙ্গে জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট রয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতির স্ত্রীর। আবার মানিকের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া দু’টি ফোল্ডারে নাম থাকা চার হাজার চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে নিয়োগ পেয়েছেন আড়াই হাজার জন। আদালতে এমনই দাবি করেন ইডির আইনজীবী।
মঙ্গলবার মানিক ভট্টাচার্যকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করে ইডি। ইডির আইনজীবীর দাবি, তৃণমূল বিধায়ককে জেরা করে নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে। তাঁকে আরও ১৪ দিনের জেল হেফাজত চায় তদন্তকারী সংস্থা। তবে মানিক ভট্টাচার্যকে ৩ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। ২৮ তারিখ ইডি আদালতে তোলা হবে তাঁকে।
[আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রী এত ছোট ঘরে থাকেন! কালীপুজোয় কালীঘাটের বাড়িতে গিয়ে বিস্মিত রাজ্যপাল]
এদিন আদালতের মানিকের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ আনেন তদন্তকারীদের আইনজীবী। তাঁদের দাবি, মানিক ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে অজস্র অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে। মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট রয়েছে মানিকের স্ত্রীয়ের। ২০১৬ সালেই মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তীর মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তির সঙ্গে সেই অ্যাকাউন্টে রয়েছে ৩ কোটি টাকা। মানিকের ছেলের অ্যাকাউন্টেও কোটি কোটি টাকা লেনদেনের হদিশ মিলেছে বলে আগেই দাবি করেছিল ইডির আইনজীবী। একাধিক অ্যাকাউন্টে ১০ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে বলে খবর।
এদিকে আবার নিয়োগ দুর্নীতিরও প্রমাণ মিলেছে মানিকের বাড়িতে। ইডির আইনজীবী জানিয়েছেন, পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতির বাড়িতে দু’টি ফোল্ডার পাওয়া গিয়েছিলে। সেখানে ছিল ৪ হাজার চাকরিপ্রার্থীর নাম। পর্ষদের নিয়োগের তালিকা হাতে পেতেই ইডির তদন্তকারীরা দেখেন, তালিকায় নাম থাকা আড়াই হাজার জন চাকরি পেয়েছেন।
[আরও পড়ুন: অবশেষে স্বাভাবিক WhatsApp পরিষেবা, গ্রাহকদের তথ্য নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন]
শুধু শিক্ষক নিয়োগ নয়, ডিএলএড কলেজে অফলাইন ভরতি থেকেও কাটমানি নিতেন তৃণমূল বিধায়ক, এমনটাই দাবি ইডির আইনজীবীদের। জানা গিয়েছে, রাজ্যের ৬০০ ডিএলএড কলেজের সঙ্গে চুক্তি ছিল মানিকের। অফলাইনে ভরতি করলে ছাত্রপিছু নগদে ৫ হাজার টাকা নিতেন তিনি। এদিন আদালতে এমনই দাবি করেন ইডির আইনজীবী।
মানিক ভট্টাচার্যের আইনজীবী দাবি করেন, তাঁর মক্কেলের বাইপাস সার্জারি করা হয়েছে। তাঁকে বাঁচতে দেওয়া হোক। শারীরিক পরীক্ষার জন্য বারবার তাঁকে জোকা ইএসআইতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, যেটার প্রয়োজন পড়ে না। দুপক্ষের সওয়াল জবাব শেষে ৩ দিনের জেল হেফাজতে নির্দেশ দেন বিচারক।