সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আকর্ষণীয় পণ (Dowry) দিতে পারলে কুৎসিত মেয়েদেরও বিয়ে দেওয়া সম্ভব! ‘পণপ্রথার সুফল’ কী কী তা জানাতে গিয়ে এমনই কথা লেখা হয়েছে এক পাঠ্যবইয়ে। শিব সেনা নেত্রী ও রাজ্যসভার সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদি শেয়ার করেছেন ওই বইয়ের একটি পাতা। যাকে ঘিরে শোরগোল নেট দুনিয়ায়। পণপ্রথার মতো কুপ্রথার অভিশাপ থেকে বেরিয়ে আসার লড়াই দীর্ঘদিন ধরে জারি সমাজে। তবুও কী করে একটি পাঠ্যবইয়ে এমন কথা ছাপা সম্ভব তা ভেবে পাচ্ছেন না মানুষ। অবিলম্বে এই ধরনের বই বাতিল করার জন্য প্রিয়াঙ্কা আবেদন করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের কাছে।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সূত্রে জানা গিয়েছে, বইটি নার্সদের (Nurse) জন্য লিখিত সমাজবিদ্যার একটি বই। যেটি লিখেছেন টি কে ইন্দ্রাণী। বইয়ের মলাটে দাবি করা হয়েছে, ইন্ডিয়ান নার্সিং কাউন্সিলের সিলেবাস অনুযায়ীই নাকি বইটি লিখিত! সেখানেই রীতিমতো ফলাও করে ছাপা হয়েছে ‘পণপ্রথার সুফল’ শীর্ষক একটি অংশ। কী লেখা হয়েছে সেখানে? রীতিমতো পয়েন্ট ধরে ধরে দেখানো হয়েছে সমাজের জন্য পণপ্রথা কতটা জরুরি!
[আরও পড়ুন: আলিয়ার পর ভাইরাল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিডিও, তৃণমূলকে ‘পুড়িয়ে মারা’র নিদান বাম ছাত্রর]
সেখানে বলা হয়েছে, নতুন সংসারকে সাজিয়ে তুলতে পণপ্রথা অত্যন্ত জরুরি। বালিশ, বিছানা, পাখা, টিভি, রেফ্রিজারেটর, বাসনকোসনের মতো নানা সরঞ্জাম এমনকী যানবাহনও দেশের সর্বত্র পণের সময় দেওয়া হয় বলেও দাবি করা হয়েছে ওই লেখায়।
পাশাপাশি এও বলা হয়েছে, বাবার সম্পত্তির একাংশ এভাবে পণের মাধ্যমেই পেয়ে যান মেয়েরা। পণের টাকা যাতে কম দিতে হয়, সেই কারণেই অনেকে মেয়েদের পড়াশোনা করান। এতে পরোক্ষে নারীশিক্ষারই প্রসার হয়, এমন দাবিও করেছেন লেখিকা। তবে সবথেকে বিপজ্জনক সম্ভবত শেষের কথাটি। সেখানে বলা হয়েছে কুৎসিত মেয়েদের কুৎসিত কিংবা সুদর্শন ছেলেদের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া সম্ভব যদি পণ আকর্ষণীয় হয়।
[আরও পড়ুন: এবার টুইটারের স্টক কিনলেন টেসলা কর্তা এলন মাস্ক, লাফিয়ে বাড়ল শেয়ারের দাম]
অবিলম্বে এমন বই বাতিল করার আরজি জানাচ্ছেন নেটিজেনরা। ১৯৬১ সালে পণপ্রথা রোধে আইন আনা হলেও আজও সমাজের এক কুব্যাধি হিসেবে তা টিকে রয়েছে। দৈনিক খবরে আজও জায়গা করে নেয় বধূহত্যা থেকে শুরু করে নানা নারী নির্যাতনের কথা, যার মূলে রয়েছে পণপ্রথাই। যেখানে প্রতিনিয়ত সমাজকে কুড়ে কুড়ে খেয়ে চলেছে এই প্রথা, সেখানে কী করে একটি পাঠ্যপুস্তকে এমন বিষয় ছাপা হতে পারে, সে প্রশ্ন তুলে প্রতিবাদে শামিল হয়েছে বহু মানুষ।