স্টাফ রিপোর্টার : তখন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনকাল। কলকাতা তখন ভারতবর্ষের রাজধানী। দেশের মধ্যে শিল্প ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে শীর্ষ স্থানে বাংলা। বাংলার বিভিন্ন কলকারখানা, অফিস-কাছারিতে কর্মী ও শ্রমিকের চাহিদা তুঙ্গে। সেই শ্রমিক ও কর্মী জোগান নিরবচ্ছিন্ন রাখতে প্রতিষ্ঠিত হল বেঙ্গল-নাগপুর রেলওয়ে। সেটা ১৮৮৭ সাল। সেই শুরু। বাংলার সঙ্গে মহারাষ্ট্রের আত্মীয়তার সূত্রপাত।
আজকের গুজরাট তখন মহারাষ্ট্র প্রদেশের অন্তর্গত। আলাদা রাজ্য হয়নি। মহারাষ্ট্র ভেঙে পৃথক গুজরাট রাজ্যের আত্মপ্রকাশ স্বাধীনতার ১৩ বছর পর। ১৯৬০ সালের ১ মে। কিন্তু বাংলায় গুজরাটি শেঠ-বণিক সম্প্রদায়ের আগমন সেই নবাবি আমল থেকেই। ইতিহাসের টুকরো টুকরো এমন অনেক স্মৃতি, গল্প উঠে এল সোমবার। কলকাতার রাজভবনে পৃথক মহারাষ্ট্র (Maharashtra) ও গুজরাট (Gujarat) রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে।
[আরও পড়ুন: কালিয়াগঞ্জে রাজবংশী যুবকের মৃত্যু: সিবিআই তদন্তের দাবিতে হাই কোর্টে মামলা পরিবারের]
এদিন সকালে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এ রাজ্যের বাসিন্দা গুজরাটি ও মারাঠি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। সেই আসরে বাংলার সঙ্গে মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের শতাব্দীপ্রাচীন সম্পর্কের কথা মনে করিয়ে দিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। দেশের বহুভাষিক চরিত্রের কথা মাথায় রেখে এদিন বাংলা, মারাঠি, গুজরাটি, তামিল, তেলুগু-সহ একাধিক ভাষায় ভাষণ দিতে শোনা গেল রাজ্যপালকে। ছত্রপতি শিবাজি ও সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের দু’টি ছবিও উদ্বোধন করেন তিনি।
[আরও পড়ুন: তরুণ প্রজন্মকে কাছে টানতে পঞ্চায়েত ভোটে সোশ্যাল মিডিয়ায় জোর বামেদের, তৈরি রূপরেখা]
অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন গুজরাটি সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদক দরশীন ভারতী। তিনি মনে করিয়ে দেন দুই রাজ্যের পুরনো সম্পর্কের কথা। তিনি বলেন, ‘‘গুজরাট আমাদের জন্মভুমি আর বাংলা আমাদের কর্মভূমি।’’ শহরের মহারাষ্ট্র নিবাস স্থাপনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন সভাপতি সুভাষ মন্ত্রী। তিনি বলেন, বেঙ্গল নাগপুর রেলপথ প্রতিষ্ঠার পর শহরে মারাঠি সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। এঁদের সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের কথা মাথায় রেখেই মহারাষ্ট্র নিবাস গড়ে তোলা হয়। ‘‘একসময় কলকাতায় গণেশ চতুর্থীর অনুষ্ঠান করতাম শুধু আমরা মারাঠিরাই। আজ শহরে ধুমধাম করে সেই পুজো করছেন বাঙালিরাও। এটাই আমাদের আত্মীয়তার প্রমাণ,’’ বলেন তিনি।