সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে ভারতে এসেছে রাফালে যুদ্ধবিমান। শত্রুর বুকে কাঁপুনি ধরিয়ে বুধবার আম্বালা বিমানঘাঁটিতে নেমেছে ৫টি ফরাসি জেট। চিনের সঙ্গে সংঘর্ষের আবহে নির্ধারিত সময়ে ভারতের হাতে যে বিমানগুলি এসেছে, এর নেপথ্যে রয়েছে কাশ্মীরের বাসিন্দা এক বায়ুসেনা অফিসারের নিরলস চেষ্টা। বায়ুসেনার শক্তি বাড়িয়ে আজ দেশের হিরো এয়ার কমোডোর হিলাল আহমেদ রাঠের৷
[আরও পড়ুন: সংস্কৃত শ্লোকে ‘গেম চেঞ্জার’ রাফালেকে স্বাগত মোদির, চিন-পাকিস্তানকে কড়া বার্তা রাজনাথের]
ফ্রান্সে ভারতের এয়ার অ্যাটাশে হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন হিলাল আহমেদ রাঠের৷ গত একবছর ধরে রাফালের নির্মাণকারী সংস্থা ‘দাসো’র সঙ্গে সমানে ময়দানে নেমে কাজ করেছেন তিনি। ইউরোপ আর ভারতীয় উপমহাদেশে যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি ও ভৌগলিক দিকগুলি যে সম্পূর্ণ ভিন্ন। বারবার সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে ফরাসি সংস্থাটিকে দিয়ে রাফালেতে (Rafale) অন্তত ১৩টি নয়া ক্ষমতা যোগ করিয়ে নিয়েছেন তিনি। ভারতীয় বায়ুসেনার জন্য বিশেষভাবে নির্মিত বাকি রাফালে বিমানগুলিও এর ফলে আরও ঘাতক হয়ে উঠবে। পাশাপাশি, রাফালে ওড়ানো ও মাঝ আকাশে ট্যাঙ্কার বিমান থেকে তাতে জ্বালানি ভরার জন্য ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট এবং টেকনিশিয়ানদের প্রশিক্ষণও চলেছে তাঁর নজরদারিতে৷ যুদ্ধবিমানের পাইলট হিসেবে রাঠেরের কর্মজীবনের রেকর্ডও অত্যন্ত প্রশংসনীয়৷ কোনও দুর্ঘটনা ছাড়াই নিজের কর্মজীবনে প্রায় ৩০০০ ঘণ্টা মিগ-২১, মিরাজ, ও কিরণের মতো যুদ্ধবিমান উড়িয়েছেন কাশ্মীরের অনন্তনাগের বাসিন্দা এই অফিসার ৷
সংবাদমাধ্যমের সামনে রাঠেরের প্রতিবেশী জুনেইদ আহমেদ বলেন, “তাঁর জন্য আমাদের গর্ব হয়। কাশ্মীরি যুবকদের তিনি নতুন পথ দেখিয়েছেন। এমন মানুষ যে আমাদের পাড়ার বাসিন্দা তা আমাদের ভাগ্য।” এদিকে, রাঠেরকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো উচ্ছ্বাসের বান ডেকেছে। সকলেই তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। রাঠেরের জন্ম কাশ্মীরের একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে। বাবা মহম্মদ আবদুল্লা রাঠের, জম্মু কাশ্মীর পুলিশের ডিএসপি ছিলেন৷ জম্মুর নাগরোটার সৈনিক স্কুলে পড়াশোনা করেন রাঠের৷ তারপর যোগ দেন ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজে৷ এরপর আমেরিকার এয়ার ওয়ার কলেজ থেকেও ডিসটিংশন নিয়ে গ্র্যাজুয়েট হন রাঠের৷ ১৯৮৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট হিসেবে নিযুক্ত হন রাঠের৷ ১৯৯৩ সালে তিনি ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট হন৷ ২০০৪ সালে উইং কমান্ডার পদে উন্নীত হন তিনি৷ ২০১৬ সালে হন গ্রুপ ক্যাপ্টেন এবং ২০১৯ সালে এয়ার কমোডোর হন বায়ুসেনার এই অফিসার৷ বায়ুসেনা পদক এবং বিশিষ্ট সেবা পদক দিয়েও রাঠেরকে সম্মানিত করেছে সরকার৷ সব মিলিয়ে বায়ুসেনার ইতিহাসে এক নয়া অধ্যায় রচনা করলেন এই আধিকারিক।
[আরও পড়ুন: রাফালের ধারেকাছে নেই চিনা যুদ্ধবিমান, মত প্রাক্তন বায়ুসেনা প্রধান ধানোয়ার]
The post রাফালের নেপথ্য নায়ক, দেশের কাছে হিরো কাশ্মীরের এই বায়ুসেনা অফিসার appeared first on Sangbad Pratidin.