সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অলিম্পিকে (Tokyo Olympics) ইতিহাস গড়ে ফেলেছেন তিনি। গোটা দেশ সোনার ছেলেকে ধন্য ধন্য করছে। হবে নাই বা কেন, ১৩০ কোটি ভারতবাসীর স্বপ্নপূরণ করেছেন হরিয়ানার সোনেপতের ২৩ বছরের যুবক। অলিম্পিক অ্যাথলেটিকসে ভারতকে প্রথম সোনা এনে দেওয়া নীরজ কুমারের (Neeraj Chopra) লড়াইও কিন্ত সহজ ছিল না। একটা সময় তাঁকেও কটাক্ষ শুনতে হয়েছে ‘মোটা বাচ্চা’ বলে। বস্তুত গোটা শৈশব তাঁকে নিজের স্থূলকায়ত্বের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে। লড়াই করতে হয়েছে নিজের সঙ্গে। আর সেই লড়াইয়ে তিনি জিতেছেন।
নীরজের যা জীবন ছিল, যে পারিবারিক প্রেক্ষাপট থেকে উঠে এসেছেন তিনি, তাতে টোকিও পর্যন্ত তাঁর পৌছনোর সফরটাই রূপকথা। পানিপতের পার্শ্ববর্তী খাণ্ডারা গ্রামে জন্ম নীরজের। পিতা ছিলেন কৃষক। দিন আনা দিন খাওয়া পরিস্থিতি না হলেও নীরজ সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মাননি। ছোটবেলায় তাঁর বাবা-মাও তাঁকে অ্যাথলিট তৈরির স্বপ্ন দেখতেন না। আর পাঁচটা মধ্যবিত্তর মতো তাঁরাও ছোট ছোট স্বপ্ন দেখতেন। নীরজের সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল তাঁর ওজন।
[আরও পড়ুন: ভারতীয় Hockey তারকা বন্দনার পরিবারকে জাতিবিদ্বেষী মন্তব্য, পুলিশের জালে আরও ১]
বয়স যখন ১১ বছর, তখন ওজন ছিল ৯০ কেজি। রীতিমতো ‘মোটা বাচ্চা’ ছিল নীরজ। সেজন্য বন্ধুমহলে টুকটাক খোঁচাও শুনতে হত হয়তো। আমাদের সমাজে ‘মোটা বাচ্চা’দের বডি শেমিং তো খুব সাধারণ ব্যাপার। নীরজের কাকা তাঁকে প্রথমে পানিপতে সাইয়ের একটি জিমে ভরতি করিয়ে দেন। উদ্দেশ্য ছিল, ছেলের শরীরের ওজন কমানো। যাতে স্থূলকায়ত্বের যন্ত্রণা তাঁকে সহ্য করতে না হয়। সালটা ২০১১। সেটাই হয়ে যায় নীরজের জীবনের টার্নিং পয়েন্ট। সাইয়ের স্টেডিয়ামেই প্রথম জ্যাভলিন ছোঁড়া শুরু করেছিল বছর তেরোর কিশোর। নীরজের কাকা ভীম চোপড়া বলছিলেন, “আমরা তো জানতামই না ও কবে বর্শা ছোঁড়া শুরু করেছে।”
[আরও পড়ুন: Tokyo Olympics: একটুর জন্য অধরা ইতিহাস, চতুর্থ স্থানে শেষ করে পদক হাতছাড়া অদিতির]
সাই সেন্টারে ভরতি হওয়ার পর কয়েক বছরের মধ্যে পালটে যায় নীরজের জীবন। ২০১৬ সালে প্রথম লাইমলাইটে আসেন ভারতের সোনার ছেলে। সেসময় বিশ্ব অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। কিন্তু অল্পের জন্য অলিম্পিকে যোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি। সেই আক্ষেপ হয়তো পুষে রেখেছিলেন নিজের মনে। ২০১৮ সালে কমনওয়েলথে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকেই নীরজ বিশ্বের সেরাদের মধ্যে পরিগণিত হন। টোকিও অলিম্পিকে (Tokyo Olympics) নিজের সেরাটাই দিলেন তিনি। স্বপ্নপূরণ করলেন গোটা দেশের।