সুলয়া সিংহ ও সুপর্ণা মজুমদার: মেঘে ঢাকল তারা। বিদায় নিলেন ‘বেণুদি’। বাংলা সিনেমার ‘চিরদিনের’ নীতা। যে নীতা বাঁচতে চেয়েছিল অভিনয়ের মাধ্যমে। সে অভিনয়ের একগুচ্ছ স্মৃতি রেখেই পঞ্চভূতে বিলীন হল তাঁর নশ্বর দেহ। পূর্ণ মর্যাদায় কেওড়াতলা মহাশ্মশানে হল শেষকৃত্য। দেওয়া গান স্যালুট। উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়-সহ টালিগঞ্জের অন্যান্য কলাকুশলীরা।
[প্রয়াত বাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগের প্রখ্যাত অভিনেত্রী সুপ্রিয়া দেবী]
শুক্রবার ভোররাতে খবরটি প্রকাশ্যে আসতেই শোকের ছায়া নামে কলকাতার শিল্পীমহলে। সকালে সুপ্রিয়া দেবীর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে সম্মান জানান প্রসেনজিৎ, দেব, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তরা। বিকেল তিনটে নাগাদ অভিনেত্রীর মরদেহ আনা হয় রবীন্দ্রসদনে। সেখানে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হন সাধারণ মানুষও। বাংলা টেলভিশনের ‘জননী’কে একবার চোখের দেখা দেখতে ভীড় জমে যায় সদন চত্বরে। ব্যবস্থা আগে থেকেই করে রেখেছিল কলকাতা পুলিশ। ব্যারিকেডের মধ্যে থেকেই লাইন দিয়ে স্বর্ণযুগের এই সোনার অধ্যায়কে চোখের জলে বিদায় জানান দর্শকরা।
[সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেনের ডাক না পেয়ে আক্ষেপও ছিল সুপ্রিয়া দেবীর]
কেবল অভিনয়ের সূত্রে সম্পর্ক নয়, ছোটবেলা থেকে ‘বেনু আন্টি’কে কাছ থেকে দেখেছেন প্রসেনজিৎ। তাঁর কোলে বসে সময় কেটেছে এক সময়। তাই হাজারও ব্যস্ততা সত্ত্বেও কাছের এই মানুষটার কাছে সারাটা দিন কাটালেন তিনি। জানালেন কত বড় মাপের অভিনেত্রী হলে উত্তম-সুচিত্রা জুটিকে টক্কর দিয়ে উত্তম-সুপ্রিয়া জুটির নামটি প্রতিষ্ঠিত করা যায়। এমন অভিনেত্রীর আত্মার শান্তি কামনা করেছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়ও।
সন্ধ্যে নামতেই আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুপ্রিয়া দেবীর মরদেহ নিয়ে সদন থেকেই শুরু হয় পদযাত্রা। নেতৃত্ব দেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নেতৃত্বেই মরদেহ কেওড়াতলা মহাশ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দেওয়া হয় গান স্যালুট। পূর্ণ মর্যাদায় হয় শেষকৃত্য। নশ্বর দেহের মিলিয়ে গেল প্রকৃতির মধ্যে। রেখে গেল বনপলাশীর সেই পদাবলী, যা বাংলা সিনেমার ‘চিরদিনের’ সম্পদ।
ছবি: প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায়
[উত্তমলোকে আজ খোলা বেণুদির রান্নাঘর]
The post পূর্ণ মর্যাদায় হল শেষকৃত্য, পঞ্চভূতে বিলীন হলেন বেণুদি appeared first on Sangbad Pratidin.