অর্ণব আইচ: ভোটের দিন ঘোষণার আগে থেকেই প্রচার শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলি। মাঝে মধ্যে অশান্তির খবরও মিলছে। সেই কারণে কলকাতার প্রত্যেকটি রাজনৈতিক সমাবেশ ও মিছিলে পুলিশকে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিলেন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা (Anuj Sharma)। শুক্রবার বডিগার্ড লাইনে কলকাতার প্রতিটি থানার ওসি ও পদস্থ পুলিশকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। এদিকে, এদিনই পুলিশ কমিশনার চারটি নতুন প্রকল্পেরও উদ্বোধন করেন। তিনি টালিগঞ্জের পুরনো থানায় ‘প্রণাম’ প্রকল্পের একটি নতুন অফিস উদ্বোধন করেন। এছাড়াও অন্য একটি অনুষ্ঠানে কলকাতা পুলিশের ৪১ জন আধিকারিক ও পুলিশকর্মীর হাতে তুলে দেওয়া হয় মেডেল।
এদিন বৈঠকে পুলিশ কমিশনার আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন, বড় সমাবেশে বটেই, পাড়ায় কোনও ছোট রাজনৈতিক সমাবেশ বা মিছিল হলেও যেন পুলিশ উপস্থিত থাকে। কারণ, সবসময় লালবাজার (Lalbazar) থেকে বাহিনী দেওয়া সম্ভব হয় না। তাই থানাগুলিকেই পুলিশকর্মীদের পাঠাতে হবে মিছিল ও সমাবেশে। অনেক সময় ছোট সমাবেশ বা মিছিল থেকেও বড় ধরনের গোলমাল হতে পারে। তার জন্যই এই ব্যবস্থা। আবার ছোট গোলমাল বা সংঘর্ষের খবর পেলেও সেখানে থানার পুলিশকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। অনেক সময় ছোট সংঘর্ষ বড় হয়ে ওঠে। শহরের আইন ও শৃঙ্খলা যাতে কোনওমতেই বিঘ্নিত না হয়, তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। ভোটের আগে জামিন অযোগ্য পরোয়ানা যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে, তাদের সকলকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। তাঁর নির্দেশ, বাড়িতে ওই ব্যক্তির সন্ধান না পাওয়া গেলে পরবর্তী পদক্ষেপে তাকে পলাতক ঘোষণা ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে হবে। আগাম গ্রেপ্তারির ব্যাপারেও গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। এখন থেকেই হিসাব বহির্ভূত টাকা, বেআইনি মদ, অস্ত্র, বিস্ফোরক আটক করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: একাধিক সভামঞ্চ থেকে কুকথা, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আইনি নোটিস শুভেন্দুর]
একইসঙ্গে শহরে বাইক চুরি বেড়েছে বলে বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করেন পুলিশ কমিশনার। পূর্ব কলকাতার একটি থানার ওসিকে এই ব্যাপারে তিনি প্রশ্ন করেন। এক পুলিশকর্তাকেও জিজ্ঞাসা করেন। সম্প্রতি একটি বাইক চুরি নিয়েও প্রশ্ন করেছেন। যদিও নাদিয়াল থেকে চুরি যাওয়া বাইক পুলিশ উদ্ধার করেছে। গত মাসে ৬টি খুনের কিনারা হয়েছে। সেই প্রসঙ্গেও আলোচনা করেন তিনি।
এদিকে, এদিন পুলিশ কমিশনার ‘সন্ধান’ নামে একটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। কলকাতায় নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে থানায় মিসিং ডায়েরি করেন আত্মীয়রা। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে খোঁজ চালিয়েও অনেকের সন্ধান মেলে না। তাঁদের খোঁজ করতেই কলকাতা পুলিশ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহযোগিতায় এই উদ্যোগ নিয়েছে। কলকাতায় অনলাইন ব্যাংক জালিয়াতির সংখ্য বেড়েই চলেছে। প্রত্যেকদিন বিভিন্ন থানায় অভিযোগ দায়ের হচ্ছে। এই জালিয়াতি রুখতে সারা শহরজুড়ে প্রচারের জন্য ‘ওটিপি রক্ষাকবচ’ প্রকল্প শুরু হয়েছে। দু’পাতার রঙিন লিফলেট দিয়ে প্রচার করা হচ্ছে, কী কী করলে শহরবাসী ব্যাংক জালিয়াতদের শিকার হবেন না। মহিলারা সাইবার অপরাধের শিকার হলে অভিযোগ জানানোর জন্য লালবাজারের সাইবার থানার পক্ষ থেকে অন্য থানাগুলিতে ‘সাইবার হেল্প ডেস্ক ফর উওমেন’ শুরু হয়েছে। কলকাতা পুলিশের প্রত্যেকটি ডিভিশনে সাইবার ল্যাব তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।