সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গ-বিপর্যয়ে আটকে পড়া ৪০ জন শ্রমিককে উদ্ধারের মুখে নতুন করে উদ্বেগ বাড়াল ধস। কিছুটা ক্ষতি হয়েছে ড্রিলিং মেশিনে। বৃহস্পতিবার দিল্লি থেকে উড়িয়ে আনা একটি উচ্চ-ক্ষমতার যন্ত্র দিয়ে ড্রিলিং করা শুরু হয়। রাতভর ড্রিলিংয়ে রাতারাতি উদ্ধার অভিযানের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতিও হয়। কিন্তু ৯০০ মিলিমিটার ব্যাসের এবং ৬ মিটার দীর্ঘ পঞ্চম পাইপটি শুক্রবার ধ্বংসস্তূপের মধ্যে ঢোকানোর মুখেই নতুন করে ধস নামায় বন্ধ হয়ে যায় উদ্ধার অভিযান। আর এর জেরেই নতুন করে ছড়াল আতঙ্ক। বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ থাকার পর অবশেষে আবার উদ্ধারকাজ শুরু হয়। গত রবিবার ভোর সাড়ে ৫টা থেকে আটকে আছেন শ্রমিকরা।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, শুক্রবার দুপুরে পঞ্চম পাইপটি সুড়ঙ্গে (Tunnel) ঢোকানোর সময় নতুন করে ধস নামে। দ্রুত উদ্ধারকারী দলকে সুড়ঙ্গ থেকে বের করে দেওয়া হয়। প্রায় এক ঘণ্টা অভিযান বন্ধ থাকে। জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত উচ্চমানের আধুনিক অগার ড্রিলিং মেশিনটি সুড়ঙ্গের মধ্যে জমে থাকা ধ্বংসাবশেষের মধ্যে দিয়ে ২১ মিটার পর্যন্ত ড্রিল করতে পেরেছে। উদ্ধারকারী দলের কর্তারা বলেন, আটকে থাকা শ্রমিকদের বের করে আনা সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু ধ্বংসাবশেষের মধ্যে কোনও শক্ত পদার্থ থাকায় সাময়িকভাবে ড্রিলিং প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। দুপুরে নতুন করে ধস নামার আগে পর্যন্ত বোঝা গিয়েছিল, আটকে পড়া শ্রমিকদের কাছে পৌঁছতে প্রায় ৪৫ থেকে ৬০ মিটার ড্রিল করতে হবে। আর ২৪ টন ওজনের উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন যন্ত্রটি ঘণ্টায় ৫ মিটার করে ড্রিল করতে পারছে। ফলে, কাজের অগ্রগতি দেখে মনে হয়েছিল আটকে পড়া শ্রমিকদের থেকে আর মাত্র কয়েক পা দূরে আছেন উদ্ধারকারীরা।
[আরও পড়ুন: রাহুলকে ‘বেকায়দায়’ ফেলার ‘পুরস্কার’? পূর্ণেশ মোদিকে বড় দায়িত্ব দিল বিজেপি]
আটকে পড়া শ্রমিকরা যাতে মানসিকভাবে ভেঙে না পড়েন, তাই লাগাতার তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। গত কয়েকদিনের মতোই পাইপের মাধ্যমে তাঁদের কাছে খাবার, জল এবং অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ঘটনাস্থলে একটি চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। কাছাকাছি হাসপাতালগুলোকেও সতর্ক রাখা হয়েছে। যাতে শ্রমিকদের উদ্ধার করার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া যায়।
এদিন ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডের প্রাক্তন জেনারেল ম্যানেজার কর্নেল দীপক পাতিল বলেছেন, “আশা করছি আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অভিযান সফল হবে। তবে আমরা সতর্ক রয়েছি। ঠিক কতক্ষণ সময় লাগবে, তা সঠিকভাবে বলতে পারছি না। কারণ খননের গতি বাড়তে অথবা কমতে পারে।” তবে যন্ত্রটির যেন কোনও ক্ষতি না হয় সেটাও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। কারণ, ধ্বংসস্তূপে বাঁকানো ধাতব জালির গার্ডার রয়েছে। এই ধরনের বাধাগুলো ভেঙে ফেলতে সক্ষম হলেও এগুলো এড়িয়ে এগনোই ভালো বলে মনে করছেন তাঁরা।