সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কানোয়ার যাত্রাপথে প্রতিটি দোকানে লিখতে হবে মালিকের নাম। উত্তরপ্রদেশে যোগী সরকারের এহেন নির্দেশিকাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। এই ইস্যুতেই এবার কড়া সুরে যোগীকে আক্রমণ শানালেন মিম সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। এই সিদ্ধান্তকে ধর্মীয় বিভাজন বলে তোপ দাগার পাশাপাশি ওয়েইসির অভিযোগ, প্রকাশ্যে এই ধরনের অস্পৃশ্যতাকে ইন্ধন দিচ্ছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।
রবিবার সর্বদল বৈঠক সেরে সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের মুখোমুখি হন মিম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। সেখানেই যোগী সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, "এই ধরনের নির্দেশ শুধুমাত্র সংবিধান বিরোধী নয়, অস্পৃশ্যতাকে ইন্ধন ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ভেদাভেদ।" তিনি বলেন, "সর্বদল বৈঠকে আমি জানিয়েছি যদি কোনও সরকার সংবিধান বিরোধী নির্দেশ জারি করে সেক্ষেত্রে ভারত সরকারের উচিত সে দিকে নজর দেওয়া। এই ধরনের নির্দেশ সংবিধানের ১৭ নম্বর ধারাকে লঙ্ঘন করে। উনি অস্পৃশ্যতাকে ইন্ধন দিচ্ছেন এটা জীবনের অধিকারের বিরুদ্ধে এবং স্বাধীনভাবে নিজের জীবিকা পালনের বিরুদ্ধে।" এ প্রসঙ্গেই ওয়েসি বলেন, "কাল যদি কোনও মুসলমান বলেন তিনি রমজান মাসে ৩০ দিন রোজা রাখেন এবং দিনের ১৫ ঘণ্টা জল খান না। তাহলে কি ওই ১৫ ঘণ্টা কাউকে জল দেওয়া হবে না? যোগী আদিত্যনাথের সিদ্ধান্ত স্পষ্টভাবে ঘৃণার ইঙ্গিত এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ভেদাভেদের বার্তা।"
[আরও পড়ুন: ‘না ভেবে নেওয়া সিদ্ধান্ত’, কানোয়ার যাত্রা বিতর্কে যোগী সরকারকে তোপ বিজেপির শরিকের]
কানোয়ার যাত্রা উপলক্ষে যোগী সরকার নির্দেশ দিয়েছে, কানোয়ার যাত্রার প্রতিটি রুটে যত খাবারের দোকান রয়েছে সেই দোকানগুলিতে বড় বড় ব্যানার দিয়ে লিখতে হবে দোকান মালিকের নাম। যার উদ্দেশ্য, পুণ্যার্থীরা যাতে আলাদা ভাবেন চিনতে পারেন হিন্দু ও মুসলিম দোকানগুলি। এই ঘটনায় যোগী সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধী শিবির। জাভেদ আখতার, সোনু সুদদের মতো সেলেবরা এই নির্দেশিকার বিরোধিতা করেছেন। প্রকাশ্যে সরব হয়েছেন বিজেপির (BJP) জোটসঙ্গী চিরাগ পাসওয়ানও। তাঁদের বক্তব্য, এই নির্দেশিকা বৈষম্যমূলক। সংখ্যালঘুদের দ্বিতীয় সারির নাগরিক হিসাবে দেগে দেওয়ার চেষ্টা। এমনকী যোগীরাজ্যকে নাৎসি জার্মানির সঙ্গে তুলনা করেন জাভেদ আখতার।
[আরও পড়ুন: প্রতিবাদের ‘শাস্তি’, মধ্যপ্রদেশে জ্যান্ত পোঁতা হল দুই মহিলাকে! ভাইরাল হাড়হিম ভিডিও]
রবিবার নতুন করে যোগী সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন তাঁরই শরিক জয়ন্ত চৌধুরি। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যসভার সাংসদ বলেন, “মনে হয় কোনও কিছু না ভেবেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেহেতু সরকার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে, তাই এখনও জেদ ধরে বসে রয়েছে। তবে এখনও সময় আছে, সরকারের উচিত এই বিষয়টিকে এত বেশি গুরুত্ব না দেওয়া। কানোয়ার যাত্রীদের জাতি-ধর্ম নিয়ে কেউ ভাবিত নয়। যাঁরা কানোয়ার যাত্রীদের সেবা করেন, তাঁদের পরিচয় নিয়েও এত ভাবার দরকার নেই।"