সুকুমার সরকার, ঢাকা: এবার ঢাকায় বৃহন্নলা বিউটি ব্লগার সাদ মুআ’কে যৌন নির্যাতন ও হত্যার চেষ্টা। ওই ঘটনায় করা মামলার প্রেক্ষিতে তিন অভিযুক্তকে পাকড়াও করেছে দেশের এলিট ফোর্স র্যাব।
[আরও পড়ুন: বাড়ছে করোনার প্রকোপ, সংক্রমণ রুখতে বাংলাদেশে ফের বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান]
রবিবার রাজধানী ঢাকার ফার্মগেট ও মহাখালি এলাকা থেকে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়। সংবাদমাধ্যমকে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারি পরিচালক এএসপি ইমরান খান জানান, চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত বৃহন্নলা বিউটি ব্লগার সাদ মুআকে যৌন নির্যাতন ও হত্যার চেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মূলহোতা ইশতিয়াক আমিন ফুয়াদ-সহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যৌন নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গত ২১ জানুয়ারি রাজধানী ঢাকার ভাটারা থানায় ওই মামলা করেন ব্লগার সাদ মুআ। মেকআপ টিউটোরিয়াল-সহ বিউটি কেয়ারের নানা ধরনের ভিডিও কনটেন্ট বানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়েন মেকআপ আর্টিস্ট সাদ বিন রাবি ওরফে সাদ মুআ। পরিচিতি পান ‘বাংলাদেশের প্রথম পুরুষ বিউটি ব্লগার’ হিসেবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেকে একজন নন-বাইনারি হিসেবে পরিচয় দেন সাদ। দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাটিয়ে ‘নন-বাইনারি’ পরিচয়ে চলতে প্রতিনিয়ত নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ছেন সাদ। তবে পরিবার পাশে থাকায় পথ চলা অনেকটা সহজ হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে সম্প্রতি বাংলাদেশে প্রান্তিক পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি ইউনিয়ন পরিষদ-ইউপি নির্বাচনে দেশের পশ্চিম জনপদ জেলা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের ছয় নম্বর ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন তৃতীয় লিঙ্গের নজরুল ইসলাম ঋতু। এরআগে ইউপি নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হলেও বাংলাদেশে এই প্রথম তৃতীয় লিঙ্গের কোনও ব্যক্তি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন। তিনি স্থানীয়দের মাঝে ‘ঋতু হিজড়া’ নামে পরিচিত। দেশের তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সেখানকার নৌকা প্রতীক শাসকদল আওয়ামি লিগের প্রার্থী নজরুল ইসলাম সানাকে পরাজিত করেন তিনি। যা নিয়ে এলাকায় রীতিমত চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে বৃহন্নলা সম্প্রদায় মোট জনসংখ্যার একটি ক্ষুদ্র অংশ। তাঁরা আবহমান কাল থেকে অবহেলিত ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠী। সমাজে বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার এ জনগোষ্ঠীর পারিবারিক, আর্থসামাজিক, শিক্ষা ব্যবস্থা, বাসস্থান, স্বাস্থ্যগত উন্নয়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ সর্বোপরি তাদেরকে সমাজের মূল স্রোতধারায় এনে দেশের সার্বিক উন্নয়নে তাদেরকে সম্পৃক্তকরণ অতি জরুরি হয়ে পড়েছে। দেশের সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রাথমিক জরিপ মতে বাংলাদেশে তৃতীয় লিঙ্গের সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার। এদের উন্নয়নে ২০১২-১৩ অর্থ বছর হতে পাইলট কর্মসূচি হিসেবে দেশের ৭টি জেলায় নানা কর্মসূচি শুরু হয়। ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে কর্মসূচি সম্প্রসারণ করে ২১টি জেলায় নানা কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয়েছে।