অভিরূপ দাস: পুজোর মুখে বাম্পার অফার। জামা-প্যান্ট সালোয়ার নয়। আস্ত একটা জীবন মিলবে বিনামূল্যে। তবে সকলের জন্য নয়। ১৫ জন এই সুযোগ পাবেন। ১৫ করোনা রোগীকে নিখরচায় সারিয়ে তুলবে দক্ষিণ শহরতলীর পিয়ারলেস হাসপাতাল। দুয়ারে শারোদউৎসব (Durga Puja 2021)। তার আগে নতুন জীবন পেতে লাইন লেগে গিয়েছে।
করোনা (Coronavirus) সারিয়ে তুলতে যে ওষুধ ব্যবহার করা হবে তা গিলতে হবে না। দুই নাকে দুটি করে স্প্রে দিনে ছ’বার দেওয়া হবে রোগীদের। ইতিমধ্যেই নাকের ওই নাইট্রিক অক্সাইড ড্রপ কামাল দেখিয়েছে কানাডায়। সে দেশে ৮৯ জন রোগীর উপর পরখ করে মিলেছে চমকপ্রদ ফল। সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই গা ঝাড়া দিয়ে উঠেছেন তাঁরা। পিয়ারলেস হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের চিকিৎসক ডা. শুভ্রজ্যোতি ভৌমিক জানিয়েছেন, দেখা গিয়েছে এই স্প্রে নাকে দিলে মাত্র দু’দিনের মাথায় ৯২ শতাংশ ভাইরাল লোড কমছে। তিনদিনের মধ্যে ভাইরাল লোড কমছে ৯৯ শতাংশ। মাত্র সাতদিনের মধ্যেই কোভিড পজিটিভ রোগী নেগেটিভ হয়ে যাচ্ছেন। সোমবার থেকেই আমজনতা আবেদন করতে পারবেন পিয়ারলেসের ওই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে। ৩০ জনের নাম নেওয়া হবে। তবে শিকে ছিঁড়বে ১৫ জনের ভাগ্যে। ডা. ভৌমিক জানিয়েছেন, পনেরো জনকে প্ল্যাসিবো এবং বাকি পনেরো জন নাকের ওই স্প্রেটি পাবেন। তবে গ্রাহকরা কেউই জানতে পারবেন না কে প্ল্যাসিবো পাচ্ছেন কে-ই বা নাইট্রিক অক্সাইড। চিন্তার কিছু নেই, যে পনেরোজন এই স্প্রেটি পাবেন না, তাঁরা করোনার আনুষঙ্গিক ওষুধ পাবেন। তাঁদেরও স্বাস্থ্যের প্রতি যথাযথ খেয়াল রাখা হবে।
[আরও পড়ুন: কুকুরের সঙ্গে উদ্দাম যৌনতা! বিপাকে তরুণী, হতে পারে জেলও]
আবেদনকারীদের জন্য শর্ত একটাই। টিকা (Corona Vaccine) নেওয়া হয়ে গিয়ে থাকলে আবেদন নাকচ হবে। এই স্প্রের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের ব্যাখ্যা, টিকা প্রাপকরা বলতেই পারেন যে টিকা নেওয়ার ফলেই করোনা সেরে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে এই স্প্রে কতটা কার্যকরী তার প্রমাণ মিলবে না। তাই করোনা আক্রান্ত কিন্তু টিকা নেননি এমন লোকেদেরই বেছে নেওয়া হবে।
নাকের এই স্প্রেতে রয়েছে নাইট্রিক অক্সাইড। যা উচ্চ রক্তচাপে জীবনদায়ী ওষুধ হিসেবে বহুদিন ধরে ব্যবহার করা হচ্ছে। এখন করোনাতেও তার ম্যাজিক নজরে আসছে। নতুন এই স্প্রে নিয়ে অনেকেই দ্বিধায়। অনেকেই ভাবছেন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে প্রমাণ মিলেছে ওষুধটি সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। শুধু তাই নয়, করোনা তাড়াতেও তা যে চমকপ্রদ কাজ দিচ্ছে, তার প্রমাণও মিলেছে। দেশীয় একটি সংস্থার তৈরি এই স্প্রে ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি আটকে দিচ্ছে।
[আরও পড়ুন: ভেনিসের রেস্তরাঁয় ‘কালনাগিনী’ মাছের স্বাদে মজলেন শ্রীলেখা! বিল দেখে মাথায় হাত অভিনেত্রীর]
দেশের ১০টি শহরে ৩০৬ জন রোগীর উপর ওষুধটির তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হচ্ছে অচিরেই। পূর্ব ভারতের একমাত্র কেন্দ্র হিসেবে তাতে সামিল কলকাতার পিয়ারলেস হাসপাতাল। কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার ছাড়পত্রের পর গত বুধবারই পঞ্চসায়রের ওই বেসরকারি হাসপাতালের এথিক্স কমিটি স্প্রেটির ট্রায়ালে অনুমতি দিয়েছে। স্প্রে নেওয়ার পর পর্যবেক্ষণে রাখা হবে করোনা আক্রান্তদের। তবে চিকিৎসকরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, মৃদু উপসর্গযুক্ত করোনা রোগীর উপর এই স্প্রে ব্যবহার করতে হবে। পালমোনারি হাইপারটেনশনের শিকার উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের উপর নাকের স্প্রের কার্যকারিতা দীর্ঘদিন ধরে প্রমাণিত। কিন্তু ওষুধটি বেশ কিছু এন্টেরোভাইরাস, ভ্যাকসিনিয়া ভাইরাস, এইচআইভির বংশবিস্তার ঠেকিয়ে দেয় বলেও প্রমাণ মিলেছে অতীতে।