সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আজ, সোমবার রাতেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে কলকাতা ফেরানোর তোড়জোড় শুরু করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। কিন্তু মন্ত্রীর আইনজীবী জানিয়েছেন, এদিন রাতটা ওড়িশার এইমস হাসপাতালেই থাকছেন পার্থ।
একাধিক ক্রনিক সমস্যা থাকলেও গুরুতর কোনও অসুস্থতা নেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। এসএসসি দুর্নীতিতে ধৃত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর শারীরিক পরীক্ষার পর এমনটাই সোমবার জানিয়েছিল ভুবনেশ্বর এইমস। বলা হয়, তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। তাই আজই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু রাতে তাঁর আইনজীবী জানিয়ে দেন, এমইসেই থাকবেন তিনি। মঙ্গলবার তাঁকে ফেরানো হতে পারে কলকাতায়।
অসুস্থতার কারণে প্রথমে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে এর বিরোধিতা করে রবিবারই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল ইডি। সেই মামলায়, ভুবনেশ্বর এইমসের চিকিৎসকদের দিয়ে পার্থর শারীরক অবস্থা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয় আদালত। সেইমতো সোমবার এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে ভুবনেশ্বরে নিয়ে যাওয়া হয় মন্ত্রীকে। তবে একাধিক শারীরিক পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, শারীরিক কয়েকটি জটিলতা থাকলেও, হাসপাতালে ভরতি প্রয়োজন নেই। এরপরই এই রিপোর্ট নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় ইডি। তাঁকে ১৪ দিনের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। পার্থবাবুর আইনজীবী দেবাশিস রায় তাঁর জামিনের আবেদন করেন। পার্থকে ১০ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।
[আরও পড়ুন: ‘দুর্নীতিকে সাপোর্ট করি না, তবে ভুল করাটাও অধিকার, পার্থর গ্রেপ্তারিতে মন্তব্য মমতার]
এদিন ইডির আইনজীবী জানান, এসএসকেএস-এই থাকতে চেয়েছিলেন। বলেছিলেন, “এসএসকেএম হাসপাতাল আমার হাসপাতাল।” এমনকী এসএসকেএমে খারাপ ব্যবহারও পেয়েছে ইডি। মিথ্যে অসুস্থতা দেখিয়েছেন পার্থ। ভুবনেশ্বরে যেতে চাননি। সেই ভিডিও ইডির কাছে আছে। এরপরই যোগ করেন, দু’জনকে সামনাসামনি জেরার জন্য ইডি হেফাজতে প্রয়োজন। এই দুর্নীতির সঙ্গে আর কে জড়িত, তা জানতে হবে তদন্তের জন্য।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় তদন্তে সহযোগিতা করছেন না বলে জানান ইডির আইনজীবী। দুর্নীতি ইস্যুতে আদালতকে তিনি বলেন, এটি একটি সিরিয়াস স্ক্যাম। যাঁরা চাকরি পাওয়ার যোগ্য তাঁরা পায়নি। কম যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীরা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। হাই কোর্টের নির্দেশ মতো তদন্ত করছে ইডি। পার্থ ও অর্পিতার বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে। সেখানে প্রচুর টাকা, সোনা পাওয়া গেছে। সম্পত্তির নথি পাওয়া গিয়েছে, যেগুলো পার্থ ও অর্পিতার নাম যৌথভাবে রয়েছে। পার্থর বাড়ি থেকে গ্ৰুপ ডি এডমিট পাওয়া গিয়েছে। এপোয়েন্টমেন্ট লেটারও পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু পার্থ এরেস্ট মেমোতে সই করতে চাননি। তাঁর বাড়ি থেকে কাগজ পাওয়ার পরেও চাননি। অর্পিতার বাড়িতে টাকা পাওয়ার কথা শোনার পর সই করেন।
অন্যদিকে একই দুর্নীতি মামলায় ধৃত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কেও এদিন ইডির বিশেষ আদালতে পেশ করা হয়। তদন্তের স্বার্থে তাঁকেও ১৩ দিনের জন্য হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় ইডি। তবে তাঁকেও ১০ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। ৩ আগস্ট দুজনকে ফের আদালতে পেশ করা হবে।