সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঝকঝকে ছবি রেস্তরাঁর। দেখে আন্দাজ করা যায়, পরিবেশ বেশ ভাল। খাবারের ছবি দেখেও লোভনীয় বলেই মনে হয়। ভাল রেস্তরাঁ কিনা তা জানতে এরপর আমআদমি নজর রাখেন রিভিউয়ের দিকে। সেখানেও যথেষ্ট ভাল ভাল কথা লেখা। এহেন রেস্তরাঁ বুক করতে তাই কোনও দ্বিধা না থাকাই উচিত। তা করেওছিলেন লন্ডনবাসী। কিন্তু কার্যত দেখা গেল, এরকম কোনও রেস্তরাঁর অস্তিত্বই নেই।
[ দানবীয় মহাজাগতিক রাক্ষস! ব্রহ্মাণ্ডে খোঁজ মিলল সবচেয়ে ‘প্রবীণ’ অন্ধকূপের ]
অস্তিত্ববিহীন এক রেস্তরাঁই এখন ঝড় তুলেছে লন্ডনে। ভ্রমণ ও খাওয়া-দাওয়া সংক্রান্ত ওয়েবসাইট ট্রিপ অ্যাডভাইজার-এর তথ্য অনুযায়ী রেস্তরাঁটির নাম , দ্য শেড অ্যাট ডালউইচ। রেস্তরাঁর মেনুতে যে নামধাম দেখা গিয়েছিল তাও বেশ চমকপ্রদ। বিভিন্নরকম মুডের নাম অনুসারেই ডিশের নাম রাখা হয়েছিল। একটা উদাহরণ দিলেই তা বোঝা যাবে, ‘লাস্ট-ব়্যাবিট কিডনিজ অন টোস্ট’। সুতরাং খাবারে-দাবারে এ রেস্তরাঁ যে বেশ অভিনব এমনটাই অনুমান করেছিলেন সে দেশের খাদ্যরসিকরা। তাই দেদার বুকও করেছিলেন। কেননা রিভিউতেও সব চমৎকার কথা লেখা। তরতরিয়ে বাড়তে থাকে রেটিং। চাহিদাও বাড়ে। শেষমেশ প্রবল দাবির জেরে রেস্তরাঁর চালু করতেও বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।
[ লালে প্রপোজ, সবুজ হলেই বান্ধবীর হাত ধরে হাঁটা ‘সিগন্যাল পুরুষের’ ]
কিন্তু ব্যাপারটা কী? কেনই বা অস্তিত্বহীন এক রেস্তরাঁ জনপ্রিয়তার এরকম শীর্ষে পৌঁছাল? কলকাঠি নেড়েছিলেন বাটলার নামে এক সাংবাদিক। একদা ট্রিপ অ্যাডভাইজর সাইটটির হয়েই ফেক রিভিউ লিখতেন তিনি। সেটাই ছিল উপার্জনের রাস্তা। সুতরাং রিভিউয়ের জেরে ভাল কীভাবে মন্দ হয়ে যায়, আর মন্দ কীভাবে ভাল হয়ে ওঠে তাই-ই প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন তিনি। নিজের বাড়ির বাগানের শেডটিকেই রেস্তরাঁ বলে চালান। ওয়েবসাইট তৈরি করেন। বেশ কিছু বন্ধুবান্ধব জুটিয়ে একের পর এক দারুণ রিভিউ লিখতে থাকেন। এর ফলেই ট্রিপ অ্যাডভাইজরি সাইটে রেস্তরাঁ শীর্ষে চলে আসে। যদিও তার কোনও অস্তিত্বই ছিল না সেদিন পর্যন্ত। ফোন করলে বলা হত, একমাত্র অ্যাপয়মেন্টের মাধ্যমেই এ রেস্তরাঁয় আসা যায়। ছবি ও রিভিউ দেখে খাদ্যরসিকরা আরও বেশি করে সেখানে যেতে চাইতেন। ফলে চাহিদা আরও বেড়েছে। ডিজিটাল পৃথিবী যে কতখানি ফাঁপা হতে পারে, তাই-ই দেখাতে চেয়েছিলেন ওই সাংবাদিক।
[ জেরুজালেমকে ইজরায়েলের রাজধানী ঘোষণা ট্রাম্পের, পালটা হুঁশিয়ারি সৌদির ]
তবে খাদ্যরসিকদের একেবারে হতাশ করেননি ওই সাংবাদিক। ওয়েবসাইটে শীর্ষস্থান পাওয়ার পর তিনি একটি ওপেনিং পার্টি দেন। যেখানে উপস্থিত ব্যক্তিদের মাইক্রোওয়েভের রান্না খাওয়ান। তবে ট্রিপ অ্যাডভাইজারের তরফে বলা হয়েছে, এই একটি ঘটনায় অবশ্য সত্যিকার ছবিটি পরিষ্কার হয় না। তা হলেও এই ঘটনা বেশ কিছু প্রশ্ন তুলে দিল। কাস্টমার রিভিউয়ের উপর ভরসা করে কেনাকাটা বা পরিষেবা গ্রহণ নতুন কিছু নয়। কিন্তু তা আদৌ সঠিক তো? এবার থেকে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবার সময়ও বোধহয় এল।
The post অস্তিত্বই নেই, তবুও হন্যে হয়ে এই রেস্তরাঁ খুঁজছেন লন্ডনবাসী appeared first on Sangbad Pratidin.