ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বিগত দিনের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে সিদ্ধান্ত। ভোটারদের আর ভোট দিতে কোথাও যেতে হবে না। অশান্তি এড়াতে এবার যুব কংগ্রেসের (Indian Youth Congress) ভোট হবে অনলাইনে। জাতীয় স্তরে পরপর রাজ্যগুলির যুব কংগ্রেসের সাংগঠনিক নির্বাচন শুরু হচ্ছে। এই বঙ্গে হবে মে মাসে। এ রাজ্যেও জাতীয় স্তরের ধাঁচেই অনলাইনে ভোট (Online Vote) দেওয়া যাবে। এবারই প্রথম এই ব্যবস্থা। শুধু তাই নয়, ভোটের ফল বেরনোর পর জয়ীদের দিল্লিতে ডেকে জাতীয় স্তরে শীর্ষ নেতৃত্ব পরীক্ষা নেবে। তার ভিত্তিতেই পরের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
একেবারে কর্পোরেট প্রক্রিয়ায় ভোট হবে। সদস্যপদ সংগ্রহের মধ্য দিয়ে আগামী ২৫ মে থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। বর্তমানে বাংলায় সদস্যপদের চাঁদা ৭৫ থেকে কমে হয়েছে ৫০ টাকা। সদস্য সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণেই তা করা হয়। যদিও বর্তমান সভাপতি সাদাব খানের দাবি অনুযায়ী, এখন সদস্য সংখ্যা প্রায় এক লক্ষ। এই সদস্য সংগ্রহ পর্ব চলবে একমাস। ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়স পর্যন্ত প্রত্যেক সদস্য ভোট দেওয়ার অধিকারী হবেন। সদস্যপদ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই চলবে অনলাইনে ভোটদান। একমাসব্যাপী প্রক্রিয়াটি চলবে। যা শেষ হওয়ার তিনদিনের মাথায় ফল প্রকাশ।
[আরও পড়ুন: প্রকৃতি মায়েরও বাঁচার অধিকার আছে, সবুজ সংরক্ষণের প্রশ্নে মন্তব্য মাদ্রাজ হাই কোর্টের]
ঠিক হয়েছে, যুবর সদস্য হওয়ার পর সেই সদস্য নিজের পরিচয় ও তিনি কোন জেলার প্রতিনিধি তা জানাবেন একটি আট সেকেন্ডের ভিডিওর মাধ্যমে। তা নির্দিষ্ট জায়গায় পোস্ট হলে একটি লিঙ্ক ও ওটিপি (ওয়ানটাইম পাসওয়ার্ড) পাঠানো হবে। তাতেই ভোটদানের ফরম্যাট থাকবে। রাজ্য সভাপতি, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক, জেলা সভাপতি, জেলার সাধারণ সম্পাদক ও বিধানসভার সভাপতি- এই পাঁচ পদের ভোট হবে। ভোটদান শেষ হলে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতেই ওয়েবসাইটটি বন্ধ হয়ে যাবে। পরে বাছাই হবে রাজ্য সম্পাদক।
শেষবার ভোট হয়েছিল ২০১৮ সালে। ৩৫ বছর বয়সের সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় বর্তমান সভাপতির মেয়াদ ফুরোচ্ছে। তার জেরেই এবার এখানে ভোট। সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে যুব কংগ্রেসের সভাপতি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন উত্তর কলকাতার সাইনা জাভেদ। কলকাতা পুরসভার ভোটে ২৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তিনি প্রার্থীও হয়েছিলেন। রয়েছেন ফারাক্কার গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য আসিফ ইকবাল ও বর্তমানে ছাত্র পরিষদের সভাপতি সৌরভ প্রসাদ। সাইনা প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরির অনুগামী বলে পরিচিত। আসিফ অধী অনুগামীদের ঘনিষ্ঠ। দু’জনই এক পন্থী। ফলে ভোট নিয়ে কিছু গোলমালের আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়াও রয়েছেন আরও ১০-১২ জন। এই পরিস্থিতিতে প্রদেশ নেতৃত্ব চাইছে এঁদের মধ্যে কেউ একজন সভাপতি হোন। বাকিরা সভাপতির সঙ্গে মিলে কাজ করুন। যুব কংগ্রেসের ভোটে এমন গোলমাল আগে বহুবার দেখা গিয়েছে। মৌসম নুর আর অরিন্দম ভট্টাচার্যর মধ্যেই একবার ভোটের দিন গোলমাল বেধে গিয়েছিল প্রকাশ্যে। তখন ব্যালটে ভোট হত।
[আরও পড়ুন: ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ নিষেধ রাহুল গান্ধীর! কংগ্রেসের তোপে তেলেঙ্গানা সরকার]
মনোনয়ন যে কেউ দিতে পারবেন। মনোনয়ন দিতে জমা দিতে হবে সাত হাজার টাকা। মহিলা ও তফসিলি জাতি-উপজাতির কেউ ভোটে দাঁড়াতে চাইলে তাঁদের জমা দিতে হবে চার হাজার টাকা। মে মাসের পাঁচ তারিখ মনোনয়ন পর্ব শুরু হচ্ছে। কারও আপত্তি থাকলে পরেরদিন জানানো যাবে। স্ক্রুটিনি হবে ১৪ মে। প্রার্থীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ হবে ১৮ মে। তার পর ২৫ মে থেকে শুরু হবে সদস্যপদ গ্রহণের কাজ। সঙ্গে চলবে ভোটদান।