স্টাফ রিপোর্টার: এতদিন যা হয়নি, এবছর সেটাই করে দেখালেন রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ভারতীয় ফুটবলের তিন ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল ও মহামেডানকে সোমবার নজরুল মঞ্চে সম্মানিত করা হল বঙ্গবিভূষণ সম্মানে। মোহনবাগান ক্লাবের (Mohun Bagan) তরফে উপস্থিত ছিলেন সচিব দেবাশিস দত্ত, সহ সচিব তথা প্রাক্তন ফুটবলার সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং ফুটবল সচিব স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের (East Bengal) তরফে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সচিব কল্যাণ মজুমদার এবং অন্যতম শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার। সম্মাননা গ্রহণে মহামেডান স্পোর্টিং (Mohammedan Sporting) ক্লাবের তরফে উপস্থিত ছিলেন ক্লাব সভাপতি আমিরুদ্দিন ববি এবং সচিব দানিশ ইকবাল। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, ভারতীয় ফুটবলের মহীরূহ এই তিন প্রধানই শতবর্ষ অতিক্রম করেছে।
মঞ্চে একঝাঁক সম্মানীয় গুণীজনের মাঝে বঙ্গবিভূষণ দেওয়ার জন্য প্রথমেই ডেকে নেওয়া হয় মোহনবাগান ক্লাবকে। ধুতি-পাঞ্জাবী পরিহিত দেবাশিস দত্ত, সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গী করে উঠে আসেন সম্মান গ্রহণের জন্য। মুখ্যমন্ত্রী মোহনবাগান সচিবের হাতে বঙ্গবিভূষণের ট্রফি এবং দু’লক্ষ টাকার চেক তুলে দিয়ে বলেন, ‘জয় মোহনবাগান’। সঙ্গে সঙ্গে নজরুল মঞ্চে উপস্থিত দর্শকরাও চিৎকার করে ওঠেন, ‘জয় মোহনবাগান’ বলে।
[আরও পড়ুন: বাংলা দলে ফিরছে গুরু-শিষ্য জুটি, হেডস্যর লক্ষ্মী, ব্যাটিং কোচ রামন]
এরপরেই বঙ্গবিভূষণ সম্মান দেওয়ার জন্য ডেকে নেওয়া হয় ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে। মঞ্চে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব সচিব কল্যাণ মজুমদার এবং ক্লাবকর্তা দেবব্রত সরকারের হাতে ট্রফি তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী, সঙ্গে দু’লক্ষ টাকার চেক। যদিও পরে ক্লাব সচিব কল্যাণ মজুমদার জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার থেকে প্রাপ্ত এই দু’লক্ষ টাকার অনুদান তাঁরা লিভার ফাউন্ডেশনে দান করছেন। মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলকে সম্মান প্রদানের পরেই ডেকে নেওয়া হয় মহামেডান স্পোর্টিংকে। একইভাবে আমিরুদ্দিন ববি ও দানিশ ইকবালের হাতে তুলে দেওয়া হয় বঙ্গবিভূষণের ট্রফি ও দু’লাখ টাকার চেক। মোহনবাগানের মতো ইস্টবেঙ্গল ও মহামেডানের ক্ষেত্রেও মুখ্যমন্ত্রী বলে ওঠেন, ‘জয় ইস্টবেঙ্গল’, ‘জয় মহামেডান’। একইরকমভাবে চিৎকার করে ওঠে নজরুল মঞ্চে উপস্থিত দর্শক-সমর্থকরা।
ইস্টবেঙ্গল কর্তারা সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, বিকাশ পাঁজি, অলোক মুখোপাধ্যায়ের মতো প্রাক্তন ফুটবলারদের, যাঁরা মঞ্চের নিচে দর্শকাসনে বসেছিলেন। বঙ্গবিভূষণ সম্মান পাওয়ার পর মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত বলেন, “এই ১৩৩ বছর ধরে মোহনবাগান ক্লাবের বিভিন্ন কর্মকর্তা, কোচ, ফুটবলারদের মিলিত প্রচেষ্টায় মোহনবাগান ক্লাব আজ বঙ্গবিভূষণ সম্মানে সম্মানিত। তাই এই সম্মান ১৩৩ বছরের ইতিহাসে মোহনবাগানের সবার।” পরে বক্তব্য রাখতে উঠে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলের মতো মহামেডানকেও তিনি আইএসএলে দেখতে চান।
মুখ্যমন্ত্রী ইস্টবেঙ্গলকে সম্মানিত করার সময় একটি অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটে। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি তথা ইমামি কর্তা রাধেশ্যম গোয়েঙ্কা। যিনি শিল্পপতি হিসেবে বিশেষভাবে সম্মানিত হন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে মুহূর্তে ইস্টবেঙ্গল সচিব কল্যাণ মজুমদার এবং ক্লাবের অন্যতম কর্তা দেবব্রত সরকারের হাতে বঙ্গবিভূষণ সম্মান তুলে দিচ্ছেন, সঙ্গে সঙ্গে নিজের আসন ছেড়ে উঠে এসে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের পাশে দাঁড়িয়ে পড়েন রাধেশ্যাম গোয়েঙ্কাও। বুঝিয়ে দেন ইস্টবেঙ্গল এখন আর শুধু
একা নয়, সঙ্গী হিসেবে পাশে রয়েছে ইমামি গ্রুপ।