দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: তাঁদের দিয়ে বেআইনি আর্থিক লেনদেন করানো হয়েছে। মানসিক যন্ত্রণায় তাঁরা ভুগছেন। আর নিতে পারছেন না। সুইসাইড নোটে এইসব লিখে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন মা, বাবা ও মেয়ে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত্যু হয় একজনের। বাকি দুজন চিকিৎসাধীন। মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুর থানার লস্করপুরে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। তদন্তে প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, দেবব্রত সরকার নামে কোনও এক ব্যক্তি এই লেনদেন করিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে এই পরিবারের কী সম্পর্ক সেটা জানা যায়নি। সেই তথ্য জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, লস্করপুর এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন দীপক রায় তাঁর স্ত্রী জলি রায় ও তাঁদের একমাত্র কন্যা দিশারী রায়। প্রথমে ওই ব্যক্তি মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটেটিভ হিসেবে কাজ করতেন। সেই কাজ তাঁর চলে যায়। পরে বাড়িতেই মুদিখানার দোকান খোলেন। কিন্তু তাতেও আয় হচ্ছিল না। ফলে সেই দোকানও বন্ধ হয়ে যায়। আর্থিক অনটনের কারণে মেয়ের কলেজের পড়াশোনাও চালানো সম্ভব হয়নি। ফলে মেয়েকে পড়াশোনাও ছাড়তে হয়।
ওই বাড়িতে দীপকবাবুর শাশুড়ি একটি ঘরে থাকতেন। দীপকবাবু তাঁর পরিবারকে নিয়ে পাশের আরেকটা ঘরে থাকতেন। দুটি ঘর মুখোমুখি। বৃহস্পতিবার সকালে জলি দেবীর বোন ডলি দাস তাঁদের বাড়িতে আসেন। অনেক ডাকাডাকি করেও সাড়া মেলেনি। এরপর ঘরে ঢুকে দেখেন তাঁর দিদি ও জামাইবাবু অচৈতন্য অবস্থায় বিছানায় পড়ে রয়েছেন। বোনঝির সামান্য জ্ঞান রয়েছে।
প্রতিবেশীদের খবর দেওয়া হয়। ওই তিনজনকে উদ্ধার করে এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ডলি দেবীকে বাঁচানো যায়নি। দীপকবাবু ও দিশারীর জ্ঞান নেই। তাঁরা সুস্থ হয়ে উঠলে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করবে বলে খবর। ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।