মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: বাসের কেবিনের কোনও অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বাসের ডান দিকের অংশও প্রায় চুরমার হয়ে গিয়েছে। বাস থেকে ছেড়ে রাস্তায় পড়ে গিয়েছে ডান দিকের অংশটি। আর ছেড়ে যাওয়া বাসের অংশের উপরে পড়ে কাতরাচ্ছে যাত্রীরা। এমনই ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনার ঘটল আমতা রানিহাটি রোডের ধূলোর বাঁধ এলাকায়।
প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, মৃতের সংখ্যা ৩। আহত হয়ে প্রায় ২০ জন ভরতি রয়েছেন পাঁচলার গাববেড়িয়া হাসপাতালে। নিহতের মধ্যে ২ জন মহিলা। অনুমান মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কয়েকজনকে ইতিমধ্যেই চিকিৎসার জন্য কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বাসের ডান দিকের চাকা ফেটে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার সন্ধে ৬টা নাগাদ করুণাময়ী-মুচিঘাটা রুটের একটি যাত্রীবাহী বাস কমপক্ষে ৮০ জনের বেশি যাত্রী নিয়ে মুচিঘাটা যাচ্ছিল। উলটো দিক থেকে আসছিল একটি দশ চাকার লরি। ধুলোর বাঁধের কাছে হঠাৎই লরি ও যাত্রীবাহী বাসটির সঙ্গে সজোরে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। কয়েক পলকের মধ্যেই বাসের কেবিনের অংশ পুরোপুরি দুমড়ে মুচড়ে যায় ও বাসের ডান দিকের অংশ বাস থেকে ছেড়ে রাস্তার উপরে পড়ে যায়। রাস্তার পাশে থাকা লোকেরা দ্রুত ছুটে আসেন। তারা আহতদের টোটোয় চাপিয়ে গাববেরিয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা তিনজনকে মৃত বলে জানান। ১৭ জনকে ভরতি করা হয়েছে। কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে কলকাতা স্থানান্তরিত করেন চিকিৎসকরা।
[আরও পড়ুন: ‘আবার বাড়ি!’, কেন অনুব্রতকে একথা বললেন আসানসোল সিবিআই আদালতের বিচারক?]
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আহতদের অনেকেই কার্যত আঘাত পেয়ে অচৈতন্য হয়ে পড়েছিলেন। বাঁদিকের অংশটি বাসের সঙ্গে লেগে থাকলেও সিটগুলো প্রায় দুমড়ে মুছে যায় এবং জানালার কাঁচের কোন অস্তিত্ব ছিল না। এতটাই বীভৎস চেহারা হয়েছে বাসটির। আহত যাত্রীদের উদ্ধার কাজ করছিলেন মারুফ মোল্লা নামে স্থানীয় বাসিন্দা। তিনি বলেন, “সবে আমি ধুলোর বাঁধ স্টপেজটা টপকেছি তারপরেই বিকট একটা ধাক্কার আওয়াজ পাই। ঘুরে দেখি পথ দুর্ঘটনা। দ্রুত ছুটে আসি এবং দেখতে পাই বাসের একটি অংশ খুলে রাস্তার উপরে পড়ে রয়েছে। আর সেই ছেড়ে যাওয়া অংশের মাঝখানে পড়ে রয়েছেন যাত্রীদের।”
কান্নার রোলে গোটা এলাকা কার্যত ভরে গিয়েছে। ছুটে আছেন অন্যান্য দোকানদাররা ও দোকানে বসে থাকা লোকেরা। সকলে মিলে উদ্ধার কাজে হাত লাগাই। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আছেন পাঁচলা থানার পুলিশও আহত যাত্রীদের হাসপাতালে নিয়ে যায়। তারা ক্রেন নিয়ে এসে বাসটিকে রাস্তার পাশে সরায়। ঘটনাস্থলে আসেন পাঁচলার বিধায়ক গুলশান মল্লিক। তিনিও উদ্ধার কাজ তদারকি করেন। আসেন পাঁচলার ভিডিও এশা ঘোষ এবং পুলিশের পদস্থ কর্তারা।