অর্ণব দাস, বারাসত: পুরসভার তরফে ডেঙ্গু সমীক্ষা চলছে রাজ্যের স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে। আর তা করতে গিয়ে আবাসনে এক দৃশ্য দেখে হতবাক পুরকর্মীরা। বারসতের (Barasat) ভাটরাপল্লি এলাকার একটি ফ্ল্যাটে অনেক ডাকাডাকি করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। বেশ কয়েকবার একই ঘটনা ঘটার খবর জানতে পেরে শুক্রবার, ষষ্ঠীর দিন ফের পুরকর্মীদের সেখানে যাওয়ার নির্দেশ দেন পুরসভার চেয়ারম্যান। এর পরই ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে অচৈতন্য (Unconcious) অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তিনজন বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে। চিকিৎসার জন্য তাঁদের বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুজোর (Durga Puja) আনন্দের মাঝে সবার অলক্ষ্যে বারাসত পুরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডের ভাটরাপল্লি এলাকার এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এখানকার একটি ফ্ল্যাট থেকেই উদ্ধার হয়েছে শশধর রায়, স্ত্রী রিনা রায় এবং রিনাদেবীর দিদি কাজল পোদ্দার। বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায় জানান, সুস্থ হওয়ার পর তিনজনের যাবতীয় দেখাশোনার দায়িত্ব নেবে বারাসত পুরসভা। এই মানবিক উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ভাটরাপল্লির বাসিন্দারা।
[আরও পড়ুন: ধর্ষক বাবা! কিশোরী মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কথা জানাজানি হতে গ্রেপ্তার ব্যক্তি]
স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, ৭২ বছরের শশধর রায় এবং তাঁর স্ত্রী রিনা রায় নিঃসন্তান। তাঁদের সঙ্গেই থাকতেন রিনাদেবীর দিদি কাজল পোদ্দার। এলাকাবাসীর দাবি, কোনও আত্মীয় তাঁদের দেখতে আসত না। বেশ কিছুদিন ধরেই ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ ছিল। কাউকে বাইরে বের হতে দেখা যায়নি। বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের দেখাশোনারও কেউ ছিল না। ফলে বয়সজনিত সমস্যা, অযত্ন সহ অপুষ্টির কারণেই তিনজন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বলেই অনুমান। সম্প্রতি পুরসভার কর্মীরা ডেঙ্গু সার্ভে করতে ভাটরাপল্লীর ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে ডাকাডাকি করেছিলেন। কিন্তু কারোরই সাড়াশব্দ পাননি। বেশ কয়েকবার এমনটা হওয়ার পর তাঁদের সন্দেহ হয়। বিষয়টি জানতে পেরে পুরসভার চেয়ারম্যান শুক্রবার সকালে পাবলিক হেলথ ম্যানেজার-সহ অন্যান্য পুরকর্মীদের ফের ওই ফ্ল্যাটে পাঠান।
[আরও পড়ুন: মহুয়ার বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে আদানি-বিরোধিতার অভিযোগ, কী অবস্থান তৃণমূলের?]
তাঁরা প্রথমে গিয়ে কথা বলেন ফ্ল্যাটের অন্যান্য বাসিন্দাদের সঙ্গে। এরপরেই ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে দেখা যায় অচৈতন অবস্থায় বিছানায় পড়ে রয়েছেন শশধর। রিনা এবং কাজল রয়েছে ঘরের মেঝেতে। ঘরের এদিক ওদিক পড়ে রয়েছে মলমুত্র। তার থেকেই ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এরপরই তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় বারাসত সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। হাসপাতালের সুপার ডাঃ সুব্রত মন্ডল বলেন, পুজোয় আনন্দে মাঝে সকলের অলক্ষ্যে অযত্নে পুষ্টির অভাব সহ বয়সজনিত কারনে তিনজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে।