রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: সম্পূর্ণ বিপরীত আদর্শের দুই সংগঠন। তবু আরএসএসের (RSS) আমন্ত্রণে তাদের আলোচনা সভায় যোগ দিতে গেলেন তৃণমূলের (TMC) তিন নেতা! পূর্ব মেদিনীপুরের (East Midnapore) এগরায় এই ঘটনা ঘিরে শোরগোল পড়তেই সাফাই দিলেন অভিযুক্ত তিনজন। তাঁদের দাবি, জানতেনই না ওটা আরএসএসের সভা। তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, একটি ধর্মীয় বিষয়ে আলোচনার জন্য। কিন্তু গিয়ে দেখেন, সেখানে এক বিশেষ রাজনৈতিক দলের ‘পার্টি ক্লাস’ চলছে, যা সম্পূর্ণ তৃণমূলের আদর্শের পরিপন্থী। তা দেখেই তাঁরা সেই আলোচনা সভা ছেড়ে চলে আসেন। গোটা বিষয়টি দলীয় নেতৃত্বকে বুঝিয়ে বলা হয়েছে বলে ‘সংবাদ প্রতিদিন’কে জানান সভায় যোগ দিতে যাওয়া এগরা ২ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য চন্দ্রশেখর জানা। দলের তরফে শোকজের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত তাঁদের বিরুদ্ধে না নেওয়া হলেও বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট শোরগোল পড়েছে।
ঘটনা মঙ্গলবারের। ওইদিন সন্ধ্যায় রামমন্দির (Ram Mandir) উদ্বোধন সংক্রান্ত একটি আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয় এগরার (Egra)ভবানীচকে আরএসএসের বাসুদেবপুর শাখার উদ্যোগে। বসুন্ধরা বাজার ভবনে ছিল আলোচনা সভা। আলোচনার বিষয় ছিল, রামমন্দির উদ্বোধনের দিন এলাকার বাড়ি বাড়িতে ভোগ বিতরণ হবে বাসুদেবপুর অঞ্চলে। বৈঠক শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর দেখা যায়, এলাকার তিন তৃণমূল নেতা চন্দ্রশেখর জানা, দীনেশ দাস ও বিকাশ সাউ সেখানে হাজির! আরএসএসের বৈঠকে কেন তৃণমূল নেতারা? এই প্রশ্নে স্বভাবতই তোলপাড় পড়ে যায়। তলে তলে আরএসএস-তৃণমূল আঁতাঁতের তত্ত্বও উঠে আসে নতুন করে।
[আরও পড়ুন: ‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’, মকাইবাড়িতে শ্রমিকদের সঙ্গে চা পাতা তুললেন মুখ্যমন্ত্রী]
এনিয়ে ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর তরফে তৃণমূল নেতাদের প্রতিক্রিয়া জানতে যোগাযোগ করা হলে চন্দ্রশেখর জানা সাফ জানান, ”আমি জানতাম না যে ওটা আরএসএসের আলোচনা সভা। আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ধর্ম সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হবে বলে। আমি এখানকার নেতা। তাই সেই আলোচনা সভায় যাই। গিয়ে দেখি, সেটা একটা রাজনৈতিক দলের বৈঠক, যে রাজনৈতিক দলের সমর্থক নই আমরা। আমি সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে চলে আসি। আমার সঙ্গে গিয়েছিলেন আইএনটিটিইউসি সভাপতি দীনেশ দাস ও পঞ্চায়েতের সদস্য বিকাশ সাউ। আমরা কেউই বুঝতে পারিনি যে রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে, বিজেপির পার্টি ক্লাস চলছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনজনেই পালিয়ে আসি সেখান থেকে।”
[আরও পড়ুন: তৃণমূলের আমলে রাজ্যের কৃষকদের আয় বেড়েছে ৩ গুণ, বিধানসভায় দাবি কৃষিমন্ত্রীর]
যদিও তিন তৃণমূল নেতার এই বৈঠকে যোগদানকে প্রশংসাই করেছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। তাদের বক্তব্য, রামমন্দির নিয়ে আলোচনায় কোনও রাজনীতি নেই। তা সকলের জন্য। ওঁরা এসে ভালোই করেছেন। এ নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের প্রতিক্রিয়া, খোঁজ নিয়ে দেখা হবে সম্পূর্ণ বিষয়টি কী ঘটেছে।