সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তুমি যে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছ, কে তা জানত! ঘুম থেকে উঠে চোখ কচলে বিশাল চেহারার বাঘকে দেখে একেবারে ‘হীরক রাজার দেশে’র গুপির মতোই অবস্থা হয়েছিল বাড়ির মালিকের। আত্মারাম খাঁচাছাড়া হওয়ার উপক্রম। পাঁচিলে বসে দিব্যি রোদ পোহাচ্ছে দক্ষিণরায়! এমন দৃশ্য তো সচরাচর দেখা যায় না। কোনওক্রমে ধাতস্ত হয়ে এলাকার বাকিদের খবর দেন ওই ব্যক্তি। আর তার পরই এলাকায় ঢুকে পড়া বাঘদর্শন করতে কাতারে কাতারে লোক ছুটে আসে।
ঘটনা উত্তরপ্রদেশের পিলিভিট জেলার আটকোণা গ্রামের। বাঘের আতঙ্কে রাতভর জেগে রইল গোটা গ্রাম। খবর দেওয়া হয় বনদপ্তরে। যে বাড়ির পাঁচিলে শুয়ে, বসে বিশ্রাম নিচ্ছিল বাঘটি, বনকর্মীরা এসে ওই বাড়ির আশপাশ খালি করে জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। এরপর বাঘের মুখে চোখে জোরালো আলো ফেলে তাকে বাগে আনার চেষ্টা করা হয়। যদিও তাতেও বিশেষ লাভ হয়নি। পাঁচিল তার কাছে এতই প্রিয় হয়ে ওঠে যে সেখান থেকে নড়তেই চাইছিল না সে। গোটা রাত এভাবে কেটে যায়। সকাল হতেই স্থানীয়দের ভিড় বাড়তে থাকে। দক্ষিণরায় দর্শনে আশপাশের বাড়ির ছাদেও উঠে পড়েন অনেকে। লোকজনের চিৎকার, হইহুল্লোড়েও কান দিচ্ছিল না বাঘটি।
[আরও পড়ুন: বদলাচ্ছে পাহাড়ের রাজনীতি! দিল্লিতে রাহুলের সঙ্গে বৈঠকে অজয় এডওয়ার্ড, কংগ্রেসকে সমর্থনের ইঙ্গিত]
উলটে রোদ আরও খানিকটা চড়া হতেই পাঁচিলে উঠে দাঁড়ায় সে। ঘুমভাঙা চোখে হাই তুলে, আড়মোড়া ভাঙে। তারপর আবার গা এলিয়ে দেয়। বাঘের এহেন কাণ্ড দেখে যেমন বিস্মিত হন স্থানীয়রা, তেমনই একইসঙ্গে আতঙ্ক ও ক্ষোভও বাড়তে লাগল। যে কোনও মুহূর্তে অপ্রীতিকর কিছু ঘটে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় বনকর্মীদের উপর চাপ বাড়াতে থাকেন তাঁরা। অবশেষে ঘুমাপাড়ানি গুলি দিয়ে প্রায় ১২ ঘণ্টা পর লোকালয় থেকে উদ্ধার করে বাঘটিকে নিয়ে যান বনকর্মীরা।
ঘটনার ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। যা দেখে শিউরে উঠছেন নেটিজেনরা। উল্লেখ্য, এই পিলিভিট থেকেই পাঁচ বারের সাংসদ হয়েছেন বিজেপি নেত্রী মেনকা গান্ধী। যিনি পশুপ্রেমী হিসেবেও পরিচিত। এখানকার লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়া, গ্রামবাসীদের হামলায় বাঘের মৃত্যুর মতো ঘটনা নিয়ে একাধিকবার সরব হয়েছেন তিনি। কিন্তু এখনও বাঘের আতঙ্ক থেকে রক্ষা পাচ্ছে না এই গ্রাম। প্রশ্ন উঠছে গ্রামবাসীর নিরাপত্তা নিয়ে।